স্টাফ রিপোর্টার
বয়বৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃদ্ধ মালেকা খাতুন। পুত্র বধূ, নাতি বেটার বৌ (নাতি ছেলের স্ত্রী) ও নাতনি নিয়ে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট দিতে এসে ছিলেন। অনেক দিন পর নিজের পছন্দের প্রার্থীদের ভোটটি দিতে পেরেছেন। কেন্দ্রের ভিতরে বা বাইরে তাদের কেউ প্রভাবিত করার চেষ্টাও করেনি।
বুধবার প্রথম ধাপে খোকসা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোটরে দিন সকাল থেকে উৎসব মুখ পরিবেশে ৫০টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সকাল থেকে উপজেলার প্রধান হাট বাজার গুলোতে দোকান পাট বন্ধ ছিল। সবার দৃষ্টি ছিল ভোটে মাঠে। উল্লেখ যোগ্য কোন দুর্ঘটনা ছাড়াই বিরতিহীন ভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। প্রত্যন্ত গ্রামের কেন্দ্র গুলোসহ উপজেলা সদরে নারী ভোটার উপস্থিতি ছিল বেশী। দুই একটি কেন্দ্রে শুধু নারী ভোটারদের ছোট ছোট লাইন চোখে পরে।
উপজেলা সদরের অদূরের কাদিরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র। এ কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১৭৩৪ জন। সকাল ১০ .১১ মিনিট পর্যন্ত কেন্দ্রটির ৫ নম্বর বুথে ৩৯০ জন ভোটারের মধ্যে মাত্র ২৩ জন ভোট দেন। বেলা ১২ টা পর্যন্ত শ্যামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ২১শ ভোটারের মধ্যে মাত্র ৩৩৫ জন ভোটার উপস্থিত হয়ে ভোট দেন।
উপজেলা কোন কেন্দ্রে পুরুষ ভোটারের লাইন চোখে পরেনি। তবে দুপুর পর ফুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ও ভবানীগঞ্জ কেন্দ্রে নারী ভোটারদের ছোট ছোট লাইন চোখে পরে। ফুলবাড়িয়া কেন্দ্রে ভোটার প্রায় ৩১৭৩ জন কিন্তু বেলা ১২টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ৯০০ জনের মত। গোপগ্রাম এ জেড ফাজিল মাদ্রাসায় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ছিল ৩৩৭৯জন কিন্ত বেলা ১২টা পর্যন্ত এ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল ২৮ শতাংশ। বেলা ২ টায় তা বেড়ে ৩৭ শতাংশে পৌচ্ছায়। একই চিত্র মেলে অধিক ঝুঁকিপূর্ন শোমসপুর ইউনিয়নের চকহরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নিশ্চিন্তবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে।
সকাল থেকে বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৫০ নম্বর বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দোয়াত কলমের এজেন্টকে বেড় করে দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পরলেও ভোট গ্রহণে বাধা হয়নি। বিরতিহীন ভাবে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত এ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলেছে।
চেয়ারম্যান পদের প্রধান প্রতিদ্ব›িদ্বতায় উঠে আসা বর্তমান চেয়ারম্যান ও প্রার্থী বাবুুল আখতার এবং অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী আল মাসুম মোর্শেদকে ধোকড়াকোন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায়। তারা বেশ ফুর ফুরে মেজাজেই ছিলেন। শেষ অবদি প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকলে দুইনেই বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদি।
শোসমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ভোট দিয়ে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে উত্তর শোমসপুর গ্রামে ফির ছিলেন বৃদ্ধা মালেকা খাতুন। বয়সের ভারে অনেকটা নুয়ে পরলেও কথায় পটু এ নারী । নিজের ভোট দেওয়া অমোছনিয় কালির দাগ দেখিয়ে নিজেরদের প্রফুল্লতার বোঝানোর চেষ্টাও করলে।
তখন দুপুর গড়িয়ে গেছে, উত্তর শ্যামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ভোট দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন অনিমা বিশ্বাস ও তিনি পুত্র বধূ সাবিত্রী বিশ্বাস, শৈল বিশ্বাস, মিনা বিশ্বাস। প্রায় ১ যুগ পর তারও নিজেদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে ভোট দিতে পরেছেন। দ্রোহের ক্যামের সামনে ভোট দেওয়া বিষয় নিশ্চিত করেন নিজের আঙ্গুলের অমোছনীয় কলমের কালির দাগ দেখিয়ে।
মুকশিতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশের অস্থায়ী চায়ের দোকানে আড্ডা মেতেছিলেন বৃদ্ধ ইউপি মেম্বর আজমত মোল্লাসহ ৪ বৃদ্ধ। আজমত মোল্লা একটি দল করেন। কিন্তু অনেক দিন পর মানুষ ইচ্ছামত তার ভোট দিতে পারায় তিনিও খুশি।
কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে চেয়ারম্যান পদের প্রধান প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থীদের পক্ষ থেকে প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যাটারিচালিত ভ্যান দেওয়া হয়। লিয়াকত আলী শ্যামপুর কেন্দ্রের একটি অংশে একজন প্রার্থী ভোটারদের আনা নেওয়া করেছেন। কিন্তু তিনি জানেন না তাকে কয় টাকা হাজিরা দেওয়া হবে।
গ্রামের ভোট কেন্দ্রে আশে পাশে ছোট ছোট অস্থায়ী দোকান বসেছিল। এসব দোকান ঘিরে ভোট কেন্দ্র গুলোর পাশে যেনো গ্রামীন মেলা জমে উঠেছিল।