অর্থপাচারে দেশের অর্থনীতি ফোকলা হয়ে গেছে: ফখরুল

0
133
ছবি সংগৃহীত

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, ব্যাংকিং খাতে চরম অব্যবস্থাপনা, লাগামহীন দুর্নীতি, অর্থপাচার করে লুটেরারা দেশের অর্থনীতি ‘ফোকলা’ বা ‘ফাঁপা’ করে ফেলেছে।

শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিগত ১৫ বছরের অর্থনীতির অবস্থা তুলে ধরে তিনি এ অভিযোগ করেন। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, এটা একদম পুরোপুরি একটা হলফ, ফাঁপা একটা বিষয়। অর্থনীতি ফোকলা হয়ে গেছে। প্রকৃতপে পুরো সম্পদ তারা লুট করে নিয়ে চলে গেছে। সেই সম্পদ বিদেশে নিয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকা ও অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্র মারফত আমাদের জানামতে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাংকিং ও অন্যান্য খাত থেকে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে এ লুটেরা চক্র।

তিনি বলেন, এখানে এই লোকগুলোর (মতাসীনদের) কোনো নতুন বিনিয়োগ নেই, কোনো নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়নি। যার ফলে দারিদ্র্য দারিদ্র্যই থেকে যাচ্ছে এবং মানুষের যে আয়ের ফারাকটা, বৈষ্যমটা যেটা সেটা দিনে দিনে বাড়ছে। এমন একটা জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে, এখন একটা পয়েন্ট অব রিটার্নে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলছে, এখানে দুটি সোসাইটি তৈরি হয়ে গেছে, একটা হচ্ছে খুবই বড়লোক শ্রেণি যারা বিদেশে যায়, দামি গাড়িতে চড়ছে। অন্যদিকে এই গুলশানেই দেখবেন সিগন্যালগুলোতে ভিার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে অসংখ্য মানুষ তারা তাদের প্রতিদিনের খাবার সংগ্রহ করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আর্থিক খাতসহ দেশে আইনের শাসন ও সার্বিক শৃঙ্খলার অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে জবাবদিহি। যেহেতু বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহি নেই, তাদের হাতে আমাদের এই দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কৃতি, বিচারব্যবস্থা কোনো কিছুই নিরাপদ নয়। আপনাদের মাধ্যমে প্রিয় দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহ্বান- আসুন বাংলাদেশে একটি সত্যিকার জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার ল্েয চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি এবং দুঃসহ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের অবসান ঘটিয়ে একটি নিরপে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপে ও অংশপ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করি, তাহলেই ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিতামূলক সরকার ব্যাংকিং সেক্টর তথা সামগ্রিক অর্থনীতিকে চরম বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করে টেকসই উন্নয়ন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সম হবো।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ব্যাংকিং খাত নজিরবিহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণেই আমাদের অর্থনীতির মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারছে না। মূলত সরকারের পলিসিগত বা রাজনৈতিক দুর্বলতা এবং ব্যক্তিস্বার্থ বা সর্বগ্রাসী লুটপাট আমাদের অর্থনীতির জীবনীশক্তিকে ক্রমেই ধ্বংস করে দিচ্ছে। যার সর্বশেষ সংযোজন কেবল দুর্নীতি ও রাজনৈতিক স্বার্থে বিভিন্ন নামে একটি বিশেষ গ্রæপ তথা ইচ্ছাকৃত লোন ডিফল্টারদের হাতে নিয়মবহির্ভূতভাবে জনতা ব্যাংক ২২ হাজার কোটি টাকা তুলে দিয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঋণ কেলেঙ্কারি ঘটেছে ইসলামী ব্যাংকে। একটি শিল্পগ্রæপ নামে-বেনামে অস্তিত্বহীন ভুয়া কোম্পানির নামে কেবল ইসলামী ব্যাংক থেকেই ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। অথচ গ্রুপটি সর্বোচ্চ ২১৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার যোগ্য। এই গ্রæপটি ন্যূনতম এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার করেছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান রবকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রল কবির খোকন ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম উপস্থিত ছিলেন।