কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র মারা গেছেন

0
58

দ্রোহ বিনোদন ডেস্ক

ঢালিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র আর নেই। রবিবার রাত সোয়া ১০টায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। গণমাধ্যমকে খবরটি জানিয়েছেন প্রবীর মিত্রের ছোট ছেলে সিফাত ইসলাম। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন।

প্রবীর মিত্র ১৯৪১ সালে চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি ঢাকার কেরানীগঞ্জের শাক্তায়। তবে ঢাকাতেই তার শৈশব জীবন কেটেছে। ঢাকার কোতোয়ালি থানার হরিপ্রসন্ন মিত্র রাস্তাটি প্রবীর মিত্রের দাদার নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে। তিনি বিএসসি পাস করার পরে লেখাপড়ার যবনিকা টানেন।

১৯৬৮ সাল থেকে প্রবীর মিত্রের চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু হয়ে ছিল। স্কুলে পড়া অবস্থায় জীবনে প্রথমবারের মতো নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এটি ছিল রবীন্দ্রনাথের ‘ডাকঘর’। এতে তিনি চরিত্র ছিল প্রহরী চরিত্রে অভিনয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে ছিলেন। এরপর পুরনো ঢাকার লালকুঠিতে শুরু হয় তার নাট্যচর্চা। পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। ছবির গল্প ও সংলাপ লিখেছিলেন আরেক শক্তিমান অভিনেতা তারই স্কুল জীবনের বন্ধু এটিএম শামসুজ্জামান।

প্রবীর মিত্র তার বর্ণাঢ্য অভিনয় জীবনে নায়ক হিসেবে হাতেগোনা কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ১৯৬৭ সালে ঢাকায় প্রথম ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ নির্মিত হয়। সেটি ছিল সাদাকালো ছবি। সেই ছবিতে আনোয়ার হোসেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা চরিত্রে অভিনয় করেন। পরবর্তী সময়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার বেশ কয়েক বছর পরে রঙিন ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ নির্মিত হয় আর এই ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ পান প্রবীর মিত্র। অসাধারণ অভিনয়ের জন্য দেশজুড়ে তিনি প্রশংসিত হয়েছিলেন।

১৯৭০ থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির তালিকায় রয়েছে ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘জলছবি’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘রক্তের ডাক’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয়পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলঙ্কার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গায়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’ প্রভৃতি।

আরও পড়ুন – শীত বস্ত্র নিয়ে হরিজন পল্লীতে ছুটে গেলেন জেলা প্রশাসক

১৯৮০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রবীর মিত্র অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির তালিকায় রয়েছে ‘নৌ চোর’, ‘সুখে থাকো’, ‘ঝুমকা’, ‘সোনারতরী’, ‘সুখের সংসার’, ‘প্রতিহিংসা’, ‘আরশীনগর’, ‘মানসম্মান’, ‘চেনামুখ’, ‘অপমান’, ‘চ্যালেঞ্জ’, ‘ফেরারী বসন্ত’, ‘আঁখি মিলন’, ‘রসের বাইদানী’, ‘নয়নের আলো’, ‘মন পাগলা’, ‘জিপসি সর্দার’, ‘দহন’, ‘মায়ের দাবি’, ‘ঘর ভাঙা ঘর’, ‘রানী কেন ডাকাত’, ‘বেদেনীর প্রেম’ প্রভৃতি।

আরও পড়ুন – ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দিল বিএনপির নেতা-কর্মীরা

প্রবীর মিত্র ‘বড় ভালো লোক ছিল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ১৯৮৩ সালে প্রথমবাররে মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার র্অজন করেন।