কুমারখালীতে গৃহবধূ আয়শা হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

0
140

কুমারখালী প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রসুতি গৃহবধূ আয়েশা খাতুনের (২৩) হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিােভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। নিহতের ২ মাসে এক শিশুকে খোলে নিয়ে মানববন্ধনে দাড়িয়েছিলে তিন বছরের শিশু মুন্না।

শনিবার দুপুরে উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের মহেন্দ্রপুর খানাপাড়ায় সড়কর দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন তাঁরা। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ওই গৃহবধূর বাবা শহিদ সরদার, মা স্বপ্না খাতুন ও তিন বছরের শিশু মুন্না। তার কোলে ছিল দুই মাস বয়সী বন।

গত ২৯ নভেম্বর সকালে শ্বশুর বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আয়সা খাতুন দুই মাস আগে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা জানান, প্রায় চার বছর আগে সদকী ইউনিয়নের বানিয়াকান্দি এলাকার জালাল উদ্দিনের মাদকাসক্ত ছেলে সজল হোসেনের (২৫) সাথে একই উপজেলার মহেন্দ্রপুর গ্রামের শহিদ সরদারের মেয়ে আয়েশা খাতুনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সজল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। সেজন্য ঘরের আসবাবপত্র, স্বর্ণালংকারসহ কয়েক লাখ টাকার মালামাল দেওয়া হয়েছে। তারপরও নির্যাতন বন্ধ না হওয়ায় আশেয়া বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ তুলে স্বামী সজলকে দিয়েছে। সেই ঋণের কিস্তি দেওয়া নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। এর জেরে গত ২৯ নভেম্বর আয়েশাকে মারধর ধরে হত্যা করেছে স্বামী বাড়ির লোকজন। কিন্তু হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে ঘরের সিলিং ফ্যানে মরদেহ ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। তাঁরা ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে হত্যাকারীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান।

নিহত গৃহবধূর বাবা শহিদ সরদার বিলাপ করতে করতে বলেন, আমার মেয়ে ফাঁস নেইনি। মাদকাসক্ত জামাই সজল ও তাঁর পরিবারের লোকজন টাকার জন্য কিল, ঘুষি ও লাথি মারে হত্যা করেছে। ঘটনার ধামাচাপা দিতে ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে লাশ ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে। আমি দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাই।

নিহতের মা স্বপ্না খাতুন বলেন, সজল বারবার টাকা চাইত। ধারদেনা করে কয়েক লাখ টাকা সোনাদানাসহ বিভিন্ন মালামাল দিয়েছি। তবুও ওরা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে ওরা।

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নিহত গৃহবধূর স্বামী সজল ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। সজল বলেন, স্ত্রীকে দিয়ে আমার শ্বশুর কয়েকটা এনজিও থেকে দুই – তিন লাখ টাকার লোন (ঋণ) তুলেছে। কিন্তু শ্বশুর সময়মতো কিস্তির টাকা দেয়না। আর টাকার জন্য এনজিওর জন্য লোকজন চাপ দিচ্ছিল। চাপ সইতে না পেরে আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে।

ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দিবাকর হালদার জানান, তিনি মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছেন। থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।