কুমারখালী কৃষি অফিসে দুদকের অভিযান

0
61

কুমারখালী প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার কুমারখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ক্ষতিয়ে দেখতে দুদক অভিযান চালিয়েছে।

বুধবার দুপুরে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক নীল কমল পালের নেতৃত্বে কুমারখালী কৃষি অফিসে অভিযান চালানো হয়।

জানা গেছে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উপজেলা কৃষি পুনর্বাসন ও বাস্তবায়ন কমিটির সুপারিশকৃত অগ্রাধিকার তালিকা উন্নয়ন সহায়তা ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে উন্নয়ন সহায়তা (ভর্তুকী) কার্যক্রমের আওতায় প্রায় ৮ প্রকারের কৃষি যন্ত্র বিতরণে অসঙ্গতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক।

উন্নয়ন সহায়তা (ভর্তুকি) কার্যক্রমের আওতায় কুমারখালীতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ৮ প্রকারের যন্ত্র কৃষকদের মাঝে বিতরণ করে। যার মধ্যে- কম্বাইন হারভেস্টার (ধান/গম) ৬টি, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার (ওয়াকিং) ৭টি, পাওয়ার প্রেসার ১১টি, মেইজ শেলার ৬টি, রিপার ৫টি, সিডার ৫টি, বেড প্লান্টার ১০টি ও পটেটো ডিগার ৭টি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক তারিক মাহমুদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত (উপজলা কৃষি অফিসার কে দেওয়া) একটি পত্রের সূত্রে জানাগেছে, উল্লেখিত বরাদ্দকৃত কৃষি যন্ত্র ৩১/০১/২০২৩ তারিখের মধ্যে অনুমোদিত অগ্রাধিকার তালিকা মোতাবেক বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উন্নয়ন সহায়তার (ভর্তুকি) মাধ্যমে যন্ত্র বিতরনে ব্যর্থ হলে প্রকল্প পরিচালককে পত্র মারফত অবহিত করতে হবে। প্রকল্প পরিচালক অনুমোদিত অগ্রাধিকার কৃষক তালিকার অপেক্ষমান তালিকা থেকে পুনরায় যন্ত্র বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এ ছাড়াও উন্নয়ন সহায়তার (ভর্তুকি) কৃষি যন্ত্র উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে উপজেলা কৃষি পুনর্বাসন ও বাস্তবায়ন কমিটি ও উপ পরিচালকের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এবং প্রকল্প কার্যালয় থেকে প্রেরিত উন্নয়ন সহায়তা প্রদান পদ্ধতি ও নির্দেশনা মোতাবেক বিতরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

তা সত্তে¡ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমারখালীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজশে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ভুয়া নাম ঠিকানাধারী ব্যক্তিদের মাঝে সরকারি কৃষি উন্নয়ন সহায়তার (ভর্তুকি) কৃষি যন্ত্র বিতরণ করেছেন।

এ প্রতিবেদকের উপস্থিতিতে দুদক কর্মকর্তারা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে সংরক্ষিত কৃষি যন্ত্র গ্রহণকারী কৃষক তালিকার একাধিক জনকে মুঠোফোনে কল করলে তাঁরা কোনো প্রকার কৃষি যন্ত্র গ্রহণ করেন নাই বলে জানান।

কৃষি উন্নয়ন সহায়তার (ভর্তুকি) কৃষি যন্ত্র বিতরণের কৃষক তালিকা তৈরি ও অনুমোদন সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে সাবেক উপজেলা কৃষি অফিসার (বর্তমান অতিরিক্ত উপ পরিচালক চুয়াডাঙ্গা জেলা) কৃষিবিদ দেবাশীষ কুমার দাসের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন – কুষ্টিয়ায় ৮ ইটভাটায় অভিযানে ১২ লাখ টাকা জরিমানা

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাইসুল ইসলাম বলেন, আমি উপজেলা কৃষি অফিসার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র কয়েক দিন। তবে দুদক কর্মকর্তারা যে সকল কাগজ পত্র দেখতে চেয়েছেন তা দেখিয়েছি। আরো কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন – কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে আমরা সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় অনুমোদিত কৃষক তালিকা বহির্ভূত ভুয়া নাম ঠিকানাধারী ব্যক্তিদের মাঝে সরকারি কৃষি উন্নয়ন সহায়তার (ভর্তুকি) অধিকাংশ কৃষি যন্ত্র বিতরণ করা হয়ে থাকতে পারে। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্তে যদি দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে দুদকের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে আাইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।