কোনো কিছুই ঢাকার মহাসমাবেশ আটকাতে পারবে না: ফখরুল

0
124

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

কোনো কিছুই ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশ ‘আটকে রাখতে’ পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

ফখরুল বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আপনারা যখন লিখবেন কোনো কিছুই আটকে রাখতে পারবে না। আওয়ামী লীগের কোনো ভয়-ভীতি, তাদের সভা-সমিতি যত কিছুই করুক, আমাদেরকে, রাস্তার মানুষকে তাদের দাবি আদায়ের েেত্র কোনো কিছুতে আটকে রাখতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার বলেন, মামলা বলেন, রাত্রিবেলা আদালতে মামলা পরিচালনা বলেন, কোনোটাই আটকে রাখতে পারবে না। সুতরাং এ ব্যাপারে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে এবারকার আন্দোলন ফলাফলের দিকে যাচ্ছে এবং জনগণের বিজয় অনিবার্য।

সরকারের পদত্যাগের এক দফা আন্দোলনে থাকা বিএনপি ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে নিজেদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করতে চায়। সেজন্য ২১ অক্টোবর তারা ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে আবেদনও করেছে। তবে পুলিশ এখনও সিদ্ধান্ত দেয়নি।

এদিকে একই দিনে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দণি গেইটে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সেদিন রাজধানী দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছে মতাসীন দলটি।

একই দিনে পাল্টাপাল্টি রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণায় জনমনে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। ২৮ অক্টোবর বৌদ্ধ স¤প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’ থাকায় রাজনৈতিক দলগুলোকে কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহŸান জানিয়েছেন বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, কোনো ধরনের ‘অরাজকতা করবে না’ প্রতিশ্রুতি দিলে বিএনপিকে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশ করার অনুমতি দিতে পারে পুলিশ।

বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, একই দিনে বড় দুই দল কর্মসূচি দেওয়ায় সংঘাতের কোনো ঝুঁকি তিনি দেখছেন কি না।

উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ যদি সরকারে থাকে, প্রতিটি পদপেই ঝুঁকিপূর্ণ, এভরি স্টেপ ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকি চিন্তা করলে তো কোনো লাভ নেই। মানুষ এখন জেগে উঠছে, মানুষ জেগে উঠে তার দাবি আদায়ে বদ্ধপরিকর।

জামায়াতে ইসলামীও ২৮ অক্টোবর মতিঝিলে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এক দফা দাবি আদায়ের ল্েয বিএনপি ‘শান্তিপূর্ণ’ কর্মসূচি দিয়েছে। অন্যান্য দলেরও অধিকার আছে সভা-সমাবেশ করার।

আওয়ামী লীগের অধিকার আছে তারা তাদের কর্মসূচি করতে পারে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে। জামায়াতে ইসলামী করতে পারে, অন্যান্য দলগুলো করতে পারে, গণতন্ত্র মঞ্চ তারা যুগপৎ আন্দোলনে আছেন, তারাও সেইদিন ডেকেছেন, প্রায় ৩৪টা দল ডেকেছেন। সুতরাং এটা পার্ট অব ইট, এটা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ। এটা তো একটা দলের বিষয় না, সমগ্র জনণের বিষয়।

মির্জা ফখরুল আগের মতই বলেন, সরকার সংবিধান অনুযায়ী ‘অবাধ সুষ্ঠু নিরপে নির্বাচন’ করার কথা বলছে, তা জনগণ আর বিশ্বজনমতকে ‘বিভ্রান্ত করার চেষ্টা’।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লায় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের মিছিলে হামলার ঘটনায় বিএনপির করা ‘তদন্ত কমিটির’ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয় সেখানে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলুর নেতৃত্বে ওই তদন্ত কমিটি করা হয়। তারা গত ১৭ অক্টোবর কুমিল্লা ঘুরে এসে প্রতিবেদন দেন। সেখানে বলা হয়, ওই হামলার ঘটনায় ‘আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদ একে এম বাহাউদ্দিন বাহারসহ য্বু লীগ ও ছাত্র লীগের সন্ত্রাসীরা’ জড়িত।

মির্জা ফখরুল বলেন, কুমিল্লায় আক্রমণটা হয়েছে, এটা আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহার তার নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতা এবং ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা এটা চালিয়েছেন। এই কথা আমরা বার বার বলেছি যে, নতুন কথা কিছু বলা নেই। এখানে যে কেনো সন্ত্রাসের ঘটনা এটা মূলত নেতৃত্ব দেয় আওয়ামী লীগ। কারণ তারা একটা সন্ত্রাসী দল, তারা প্রথম থেকেই সন্ত্রাস করে এসেছে, সন্ত্রাস করে তারা টিকে আছে।

অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং যুব দলের সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।