খাবার পানির জন্য গ্রাম জুড়ে হাহাকার

0
155

স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসায় হঠাৎ’ করে ভূগর্ভস্ত পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় কয়েকটি গ্রামে টিউবয়েলে পানি ঊঠছে না। ফলে কয়েকটি গ্রামে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

উপজেলা শিমুলিয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম বসোয়া। সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় বিলের তলার এ গ্রাম। প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের বাস এখানে। সব বাড়িতেই নিজস্ব টিউবয়েলও আছে। এ চলতি শুষ্ক মৌসুম শুরুর সাথে সাথে বসোয়া পশ্চিম ও উত্তর পাড়ার অধিকাংশ স্থানে ভূগর্ভস্ত পানির স্তর নিচে নেমে যায়। ফলে টিউবয়েল গুলোতে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে এলাকার মানুষের খাবার ও নিত্যকার কাজের পানির জন্য মাঠের স্যালো পাম্পের পানির উপর নির্ভরশীল হয়ে পরে। ভুগর্ভস্ত পানির স্তর আরো নিচে নেমে যাওয়ায় এ গ্রামের বিলের জমিতে সেচ কাজের প্রায় ৩০টি স্যালো পাম্প বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শুধু এ গ্রামটিতে নয় এ ইউনিয়নের কালীশংকর পুর, মানিকাট, জানিপুর ইউনিয়নের ইচলাট, ঈশ্বরদীসহ ৮টি গ্রাম জুড়ে খাবার পানির সংকট আরো তীব্র হয়ে উঠেছে।

রবিবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে গ্রামের নারী পুরুষ জনপ্রতিনিধি সহ সর্বস্তরের মানুষের সাথে তাদের সমস্যার বিষয়ে কথা বলা হয়। গ্রামে মেম্বর নাসির উদ্দিন নিজেই দু’সপ্তাহ ধরে প্রতিবেশীর বাড়ির সাব মার্সিবল টিউবয়েরের পানি খাচ্ছেন। গ্রামের অর্ধেক লোকের খাবার পানির সরবরাহ করা হয় একই প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে।

ব্যবসায়ী শুকুর সরদার তার বৈঠক খানার বাইরে একটি ট্যাপে নিয়মিত পানি সরবরাহ করে থাকেন। গ্রামের নারী পুরুষ সবাই এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় পানি নিচ্ছেন। এখানেই দেখা হয়ে যায় মধ্য বয়সী নারী আসমানী, বিলকিস, নাজমা ও মালেকার সাথে। তাদের সবার হাতেই পানির পাত্র। ইফতারির আগে খাবার পানি নিতে এসেছেন। এই টিপকলই তাদের একমাত্র ভরসা হয়েছে উঠেছে বলে তারা জানান।

গ্রামবাসীর তীব্র খাবার পানির সংকটে এগিয়ে আসা ব্যবসায়ী শুকুর সরদারের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার কলেজ পরুয়া ছেলে সায়েদ জানান, সংকটের সময় গ্রামবাসীদের পাশে থাকতে পারাটা কম সৌভ্যাগ্যের বিষয় নয়।

ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় মেম্বর নাসির উদ্দিন নিজেই পানির সংকটে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বিলে অন্যের স্যালো মেশিনের পানিতে গোসলে গিয়েছিলেন। অনেক অপেক্ষার পর তিনি এলেন। তিনি জানান, মাটির নিচের পানির স্তর দ্রæত নিচে নেমে যাওয়ায় গ্রাম জুড়ে পানির জন্য হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। গ্রাম বাসির পানি সংকটের কথা তিনি উপর মহলে আলোচনা করেছেন। কিন্তু সেখান থেকে কোন ভালো খবর পাওয়া যায়নি বলেও জানান। তিনি এই গ্রামে কয়েকটি আরসেনিক মুক্ত টিউবয়েল স্থাপনের মাধ্যমে গ্রামবাসীদের পানি সংকট নিরশনের দাবি জানান।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের স্থানীয় উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুমন আলী বলেন, জনস্বাস্থ্যের টিউবয়েল বন্ধ হওয়ার কথা না। তবে জন স্বাস্থ্যের ক’টি টিউবয়েল এই গ্রামে আছে সে সম্পর্কে তার কাছে কোন তথ্য নেই বলে জানান। গ্রামবাসীদের খাবার পানির সংকট সম্পর্কে তিনি ভালো জানেন না।