নাটোরে ১৬ চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার

0
218

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

চুরি যাওয়া একটি মোটরসাইকেল উদ্ধারে নেমে ১৬টি চোরাই মোটরসাইকেলসহ আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রে’র আট জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নাটোর জেলা পুলিশ।

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নাটোর পুলিশ লাইন্সে এক সংবাদ সম্মেলনে নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, বুধ থেকে বৃহস্পতিবার ভোররাত পর্যন্ত পাবনা ও সিরাজগঞ্জের জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের চৌকস সদস্যরা এ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে।

আটক চোর চক্রের বিভিন্ন সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যা, চুরিসহ বিভিন্ন থানায় ছয় থেকে সাতটি করে মামলা আছে বলে জানান পুলিশ সুপার।

আটকরা হলেন, বগুড়ার গাবতলীর পুরাদহ এলাকার বাদশা সরকারের ছেলে দুলাল মিয়া, টাঙ্গাইলের ভ‚ঞাপুরের পাখাইলকান্দির মোজাফর আলী আকন্দের ছেলে আইয়ুব আলী, পাবনার আমিনপুরের সৈয়দপুর এলাকার হিরু খানের ছেলে শামীম খান ও কালিনগর এলাকার এরশাদ আলীর ছেলে নাছির উদ্দিন, রাজশাহীর এয়ারপোর্ট থানার বাইয়া এলাকার শামীম বাবুর ছেলে আল-আমিন ইসলাম যার বর্তমান ঠিকানা পাবনা বেড়ার নতুন বারেঙ্গা এলাকা, পাবনার বেড়ার শ্রীকন্ঠদিয়া এলাকার সোলেমান শেখের ছেলে খবির শেখ, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর বাতিয়া এলাকার আব্দুল জলিল মÐলের ছেলে বাচ্চু মিয়া, এবং পাবনা আতাইকুলা চুলকাটা এলাকার মিনহাজ উদ্দিনের ছেলে জিয়াম হোসেন জিম।

নাটোর পুলিশ লাইন্সে সরেজমিনে উদ্ধারকৃত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৬ মোটরসাইকেলের দুইটিতে রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং দুই-একটিতে অনটেস্ট এবং বাকিগুলো নম্বরপ্লেটবিহীন অবস্থায় দেখা যায়।

পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, উদ্ধার করা মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ও চ্যাসিজ নম্বর দেশের সব থানায় ম্যাসেজ দিয়ে দেওয়া হবে। যাদের মোটরসাইকেল মিসিং আছে, তারা বৈধ কাগজ-পত্র নিয়ে যোগাযোগ করে মোটরসাইকেল ফিরিয়ে নিতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, কিছু দিন আগে নাটোরের সিংড়ার সিংড়াপাড়া এলাকার ওসমান গণির ধান শুকানো খোলা থেকে লাল-কালো রংয়ের একটি ডিসকভার একশ পঁচিশ সিসি মোটরসাইকেল চুরি হয়। তিনি খোঁজাখুজি করেও মোটরসাইকেলটি না পেয়ে সিংড়া থানায় মামলা করেন।

এরপর সিংড়া থানার পুলিশের একটি চৌকস টিম চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার এবং জড়িতদের আটকে কাজ শুরু করে। আমি বিষয়টি পুলিশের বিশেষ ইউনিট অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটকে (এটিইউ) সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করি।

সিংড়ার থানার চৌকস টিম এবং এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের একটি চৌকস দল অভিযান চালিয়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাতিয়া এলাকা থেকে মামলার চোরাই মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে।

পুলিশ সুপার বলেন, পরে আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রের আটক আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে সিরাজগঞ্জ, পাবনার বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৫টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এ অভিযান পরিচালনায় পাবনা ও সিরাজগঞ্জের থানা-পুলিশের সম্পূর্ণ সহযোগিতা আমরা পেয়েছি।

এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা তারিকুল বলেন, একেকটা মোটরসাইকেল তিনটা হাত বদল হয়েছে। আটকরা তিনটা টায়ারে কাজ করে। শুরুতে একটি দল মোটরসাইকেল চুরি করে অন্য দলের কাছে হাতবদল করে দেয়। পরে তারা আরেকটি দলের কাছে পাঠিয়ে দেয় মোটরসাইকেল।

এই এলাকার মোটরসাইকলে চলে যাচ্ছে অন্য এলাকায়, অন্য এলাকার মোটরসাইকেল চলে আসছে এই এলাকায়। দেশব্যাপীই এই মোটরসাইকেল চোর চক্রের একটা নেটওয়ার্ক আছে।

এ চক্রটি কতদিন ধরে মোটরসাইকেল চুরির সঙ্গে জড়িত জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, প্রতিদিনই কিন্তু আমরা শুনি মোটরসাইকেল মিসিং হয়েছে। আটকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য আমরা খুব কম সময় পেয়েছি। জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্যসহ আরও অন্যান্য তথ্য আমরা পাবো।

মোটরসাইকেল চুরির ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান বলে জানান, জেলার শীর্ষ ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আখিউল ইসলাম, নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এ.টি.এম মাইনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) শরিফুল ইসলাম, সিংড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আকতারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।