দ্রোহ অনাইন ডেস্ক
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্টি সহিংসতায় বাংলাদেশে অন্তত ৩২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। শিশুদের মৃত্যুতে উদ্বেগ জানিয়েছে ইউনিসেফ। একই সঙ্গে শিশুদের গ্রেফতার বন্ধ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রæত খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
শুক্রবার (২ আগস্ট) ইউনিসেফের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক সঞ্জয় উইজে সেকেরা।
বিবৃতিতে সঞ্জয় উইজে সেকেরা বলেন, বাংলাদেশে জুলাই মাসে বিক্ষোভের সময় অন্তত ৩২ শিশু নিহত হয়েছে বলে ইউনিসেফ নিশ্চিত হয়েছে। শিশুদের এমন মৃত্যু ভয়ানক ক্ষতি। তাছাড়া অনেক শিশু আহত হয়েছে। অনেককে আটক করা হয়েছে। ইউনিসেফ সব ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানাচ্ছে।
আরও পড়ুন – জামিন পেলো ৪২ এইচএসসি পরীক্ষার্থী
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, বাংলাদেশের স্বাক্ষর করা জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ এবং আটক করা হলে শিশুদের ওপর যে প্রভাব পড়ে, তা নিয়ে গবেষণার ভিত্তিতে ইউনিসেফ শিশুদের যেকোনো ধরনের আটক বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছে। এর অর্থ হলো কোনো স্থানে শিশুদের উপস্থিতি বা তাদের পূর্বের ইতিহাস, ধর্ম ও তাদের পরিবারের কর্মকান্ড বা মতাদর্শের জন্য শিশুদের গ্রেপ্তার বা আটক করা যাবে না।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সহিংসতার প্রভাব থেকে শিশুদের বের করে আনতে হবে। তাদের নিরাপদে রাখতে স্কুলগুলো খুলে দেওয়া, পড়াশোনা পুনরায় চালু এবং বন্ধুবান্ধব ও শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের আবার মিলিত হওয়ার সুযোগ তৈরি করা সবচেয়ে ভালো উপায়গুলোর অন্যতম।
উইজে সেকেরা বলেন, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৩ কোটি শিক্ষার্থী টানা ১০ দিন স্কুলে যেতে পারেনি। এ বছরের শুরুতে শৈত্যপ্রবাহ, তাপপ্রবাহ, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার কারণে শিক্ষার যে ক্ষতি হয়েছিল, তার সঙ্গে নতুন করে স্কুল বন্ধ হওয়ার ক্ষতি যুক্ত হয়েছে।
ইউনিসেফের এ কর্মকর্তা বলেন, গত ৪ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ইউনিসেফ। তারপরও প্রায় ১ কোটি ৫৫ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা শুরু করতে পারবে না। যত দীর্ঘ সময় শিশুরা, বিশেষ করে কন্যাশিশুরা স্কুলের বাইরে থাকবে, ততই তাদের পড়াশোনায় ফেরার সম্ভাবনা কমবে। এতে তাদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে পড়বে।
উইজে সেকেরা বলেন, বাংলাদেশ সরকার, ইউনিসেফের অংশীদার এবং তরুণদের জন্য কাজ করছে, এমন সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে শিশুদের একত্র হওয়া ও শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। শিশু ও তরুণরা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তারা যখন কোনো কিছু নিয়ে সোচ্চার হন, তখন তাদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা দেওয়া উচিত বলে মনে করে ইউনিসেফ।