মুন্নাফ আলীর বাঁশের চরাটের হালখাতা

0
79

স্টাফ রিপোর্টার

সিরাজপুর হাওড় নদীর উপর বাঁশের চরাট দিয়ে বাংলাট ও মাঝাইল গ্রামের মানুষের যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন মুন্নাফ আলী। সারা বছর নদী পাড়া পারের ভাড়া হিসেবে বছরের একবার হালখাতা করেন। প্রতি পরিবারের পক্ষ থেকে ধান, পাট, পেঁয়াজসহ ফসল অথবা নগদ টাকা দিয়ে খাজনা পরিশোধ করেন কৃষকরা।

গড়াই নদীর অন্যতম প্রধান শাখা সিরাজপুর হাওড়। এক সময়ে খড়ো¯্রােতা নদী ছিল। দুই পারের মানুষের যোগাযোগের জন্য একাধিক খেয়া ঘাট ছিল। খেয়া নৌকা পারাপার হত। রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার বাংলাট ও মাঝাইল গ্রামের মানুষের পাড়াপারে খেয়া ঘাটছিল। কালের বির্বতমানে নদীটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। আশে পাশের অনেক জায়গায় ব্রিজ তৈরী করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাট ও মাঝাইল গ্রামের মাঝে ব্রিজ তৈরী হয়নি। পিছিয়ে পরা এলাকার কয়েক হাজার মানুষের নদী পারের একমাত্র ভরসা মমুন্নাফ আলীর “বাঁশের চরাট”।

প্রতি বছর কার্তিক মাসের প্রথম শুক্র-শনি দুই দিন বাঁশের চরাটে হালখাতার আয়োজন করেন মুন্নাফ আলী। এবছরও চরাটের উপর রঙিন কাপড়ের চাঁদোয়া খাটিয়েছেন। গাছে দুটি মাইক লাগিয়েছেন। মাইকে গান বাজানোর সাথে সাথে লোক ডাকাও হচ্ছে। কৃষকরা হালখাতা করতে আসছেন। ধান, পাট, পেঁয়াজসহ কৃষিপন্য দিয়ে হালখাতা করছেন। অনেকেই নগদ ৩০-৫০ টাকাও দিয়ে যাচ্ছে। হালখাতা করলেই মুন্নাফ আলীর পক্ষ থেকে পান-বিড়ি দিয়ে আপ্যায়ণ করা হচ্ছে।

মুন্নাফ আলী জানান, বাঁশ কিনে নিজে শ্রম দিয়ে চরাট তৈর করে এলাকার কৃষকসহ সাধাারণ মানুষের নদী পারাপারের ব্যবস্থা চালু রেখেছেন। এই দুই গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বসবাস করেন। অনেক ছেলে মেয়ে স্কুল কলেজে পড়ে। তারাও প্রতিদিন এই বাঁশের চরাট দিয়ে যাতাযাত করে। যাদের বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল আছে তার তিন চার কিলোমিটার ঘুরে যেতে পারে। কিন্তু সাধারন মানুষের নদী পারাপারে একমাত্র ভড়সা এই বাঁশের চরাট।

আরও পড়ুন – ওবায়দুল কাদেরের খোঁজ দিলে ‘পুরস্কার’ দেবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

তিনি আরও জানান, নদীর দুু’পাশেই পাকা রাস্তা আছে। বাংলাট ও মাঝাইল গ্রামের মধ্যে নদীতে ছোট একটা ব্রিজ তৈরী করা হলে কয়েক হাজার মানুষের ভোগান্তি লাঘব হতো।