স্টাফ রিপোর্টার
শ্বশুর বাড়ির লোকেরা মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে গোলাম রাব্বী (২৫)র মুখের মধ্যে জোর করে বিষ ঢেলে দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। বিষক্রিয়ায় অসুস্থ্য ছেলের শ্বশুর বাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেন বৃদ্ধ পিতা আতিয়ার শেখ।
হাসপাতালে ভর্তি বিষক্রিয়ায় অসুস্থ গোলাম রাব্বী খোকসা উপজেলার গোপগ্রাম ইউনিয়নের আমলাবাড়িয়া গ্রামের আতিয়ার শেখের ছেলে। তিনি পেশায় একজন কাঠ মিস্ত্রী। থাকেন ঢাকায়। গত বুধবার রাত ২টার পর বিষক্রিয়ায অসুস্থ্য রাব্বীকে শ্বশুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। তাকে রাতেই খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
জানা গেছে, গত দুই বছর আগে পারিবারিক ভাবে পাংশা ও খোকসা উপজেলার সেনগ্রামের লোকমান মোল্লার মেয়ে ময়না (২০) কে রাব্বী বিয়ে করে। শুরু থেকে স্বামীর পরিবারের সাথে ময়নার বনীবনা নেই। ১৭ দিন আগে ময়নার ৭মাসের শিশু সন্তান মারা যাওয়। এর পর থেকে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। এক পর্যায়ে ৭দিন আগে ময়নার বাবা ভাই মেয়েকে নিয়ে যায়। বুধবার স্ত্রী ময়নার ফোন পেয়ে রাত ৯টার দিকে শ্বশুর বাড়ি সেন গ্রামে যায় রাব্বী। এর ঘন্টা খানেক পর বিষক্রিয়া সে (রাব্বী) অসুস্থ্য হয়ে পরে। এক পর্যায়ে গ্রাম্য ডাঃ আজিজকে ডাকা হয়। সে রোগীর চিকিৎসা শুরু করে। পরে রাব্বীর পরিবার তাকে শ্বশুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধিন গোলাম রাব্বী জানান, স্ত্রীর ফোন পেয়ে তিনি শ্বশুর বাড়ি যান। একটি ঘরে তার থাকার ব্যবস্থাও করা হয়। কিছু সময় পর স্ত্রী ময়নার বড় ভাই রেজাউল ও অন্যরা তাকে বিছানায় আটকায়। এক পর্যায়ে তারাই তার মুখে জোর পূর্বক বিষ ঢেলে দিয়ে আটকে রাখে। পরে প্রতিবেশীদের পরামর্শে গ্রাম্য ডাক্তার আনা হয়। সেখানে কথিত ডাক্তার তার ওয়াশ করে। পরে খবর পেয়ে বাবা ভাই তাকে উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেপ্লক্সের কড়িডোরে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধ আতিয়ার শেখ অভিযোগ করে বলেন, ফোনে তার ছেরে কে ডেকে নিয়ে বিষ খাওয়ার নাটক সাজিয়েছে। প্রকৃত পক্ষে ছেলের শ্বশুর বাড়ির লোকেরা তার ছেলে হত্যা করতে চেয়েছিল। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
গৃহবধূ ময়নার ভাই রেজাউল বলেন, রাতে তারা সবাই গ্রামের মসজিদে তারাবি পড়তে গিয়েছিলেন। এ সময় তার বোনের জামাই রাব্বীর বিষ পানের খবর পান। তারা গ্রামের ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা শুরু করিয়েছিলেন। পরে ছেরে পরিবারকে খবর দিয়ে তাদের কাছে রাব্বীকে বুঝে দেওয়া হয়।
পল্লী চিকিৎসক আব্দুল আজিজ জানান, তিনি যখন রোগীর কাছে যান তখন তার মুখ দিয়ে লালা ঝড়ছিল। তিনি দ্রæত ওয়াস দেন। প্রচুর বিষ ওঠে। ওই যুবক তরল বিষ পান করেছিল। ওয়াসের সময় প্রচন্ড দুগন্ধ পাওয়া গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত উপসহকারী মেডিকেল অফিসার রাকিবুল ইসলাম জানান, রোগী আগের থেকে ভালো আছে। সুস্থ্য হতে সময় লাগবে।