আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

0
49

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সাব-রেজিস্টার অফিস দখল করে চাঁদাবাজি, চাঁদার টাকা ভাগাভাগি ও আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে দৌলতপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন- উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর ইকবাল কর্নেল, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রতন, দৌলতপুর কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কৌশিক আহমেদ, ছাত্রদলের নেতা পারভেজ। তারা দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়াও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দলিল রেজিষ্ট্রি করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছিলেন লাখ লাখ টাকা। সাব-রেজিস্ট্রার ও দালাল চক্রের মাধ্যমে বাধ্যতামূলকভাবে প্রতি দলিল রেজিস্ট্রি করার জন্য অতিরিক্ত ২৫০০ টাকা আদায় করা হয়। নামের ভুল থাকলে ঘুষ দিতে হয়। পরিচয়পত্র অনলাইন থেকে প্রিন্ট করাতে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা দিতে হয়। দলিলের দাম বেশি নেয়া হয় ও প্রতিটি সেবার জন্য পদে পদে ঘুষ দিতে হয়।

আরও পড়ুন – প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন চালু হয়নি

টানা ১৫ বছর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত চক্রটি চাঁদাবাজি করে আসছিল। ৫ আগস্টের পর তারা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পর থেকে বিএনপি দখলে নিয়ে চাঁদাবাজি শুরু করে। কয়েকদিন ধরে বিএনপির দুই গ্রæপের মধ্যে সাবরেজিস্টার অফিস দখলসহ চাঁদাবাজির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এ নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন স্থানীয়রা। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার দুই গ্রæপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনে।

আহত কর্নেল, রতন, কৌশিক ও পারভেজ বলেন, দৌলতপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দুর্নীতি অনিয়মের ব্যাপারে আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে গঠিত দালাল চক্র এই সাব রেজিস্টার অফিসে দুর্নীতি অনিয়ম ও চাঁদাবাজি করতো। ৫ আগস্ট নতুন করে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের সেসব নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যায়। এখন বিএনপির একটা পক্ষ চাঁদাবাজির করে আসছিল। আমরা প্রতিবাদ করায় প্রতিপক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের উপর হামলা করে।

এবিষয়ে দৌলতপুর সাব-রেজিস্ট্রার আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ওদের চাচা ভাতিজার পারিবারিক ঝামেলা। এটা দলীয় কোন বিষয় না। তবে তারা সবাই বিএনপি করে।

দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।