কুমারখালীতে টিকা দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান, ছবি-ভিডিও ভাইরাল

0
140
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান খান টিকা গ্রহন কারীর শরীরে টিকা পুশ করেছেন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রশিক্ষিত নার্সের পরিবর্তে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান খান তিন জন টিকা গ্রহন কারীর শরীরে টিকা পুশ করেছেন। তাঁর এই টিকা পুশের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

প্রশিক্ষিত নার্সের বদলে একজন জনপ্রতিনিধির টিকা দেওয়ার ঘটনাকে খুবই ভয়ানক বলে দাবি করেছেন চিকিৎসকরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা বলেন, দক্ষ নার্স, চিকিৎসক বা চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া কেউ এটা পুশ করতে পারেন না।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান খান টিকা গ্রহন কারীর শরীরে টিকা পুশ করেছেন

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সঠিকভাবে টিকা দেওয়া না হলে মাংশপেশির চারপাশে প্রদাহ দেখা দিতে পারে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এটা কোনোভাবেই তিনি (উপজেলা চেয়ারম্যান) করতে পারেন না। করোনা টিকা দেওয়ার জন্য নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁরাই টিকা প্রদান করতে পারেন। অন্য কারও টিকা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার বেলা ১১টার দিকে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্রে করোনা টিকা দেওয়া শুরু হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বেচ্ছাসেবকেরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সিরিঞ্জ হাতে নিয়ে তিনজনের শরীরে টিকা দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান খান। নার্স ও চিকিৎসকেরা তাঁকে সহায়তা করেন। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের টিকা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ৫৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে তাঁকে টিকা পুশ করতে দেখা যায়।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যে তিনজনের শরীরে করোনার টিকা পুশ করেছেন তাঁরা হলেন কুমারখালী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মী মোখলেছুর রহমান ও স্থানীয় সাংবাদিক কে এম আর শাহীন।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে টিকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমি ভয় পাচ্ছিলাম। অন্যদিকে তাকিয়ে ছিলাম। পরে শুনেছি উপজেলা চেয়ারম্যান টিকা পুশ করেছেন। চেয়ারম্যান না দিয়ে নার্স দিলেই ভালো হতো।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আকুল উদ্দিন বলেন, ঘটনার সময় তিনি ওই কক্ষের বাইরে ছিলেন। বিষয়টি তাঁর জানা নেই।

আবদুল মান্নান খানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।