কুমারখালী প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের যুবসমাজ মাদকে আশক্ত হয়ে পরছে। পিছিয়ে নেই নন্দলালপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কিশোর- যুবকেরা।
বুধবার সকাল থেকে নন্দলারপুর ইউনিয়নে সরেজমিনে ঘুরে মাদকের ভয়ার চিত্র চোখে পরে। বুজরুক বাঁখই, শিবরামপুর- পুরাতন চড়াইকোল ও দুর্গাপুর গ্রামের অনেক অভিভাবকের সাথে আলাপ চারিতায় মাদকের ভয়াল তর্থ্য পাওয়া যায়। উচ্চবুত্ত থেকে নিন্ম আয়ের অবিভাবকদের দিন কাটছে চরম হতাশা ও দুশ্চিন্তায়।
পুরাতন চড়াইকোল গ্রামের বাসিন্দারা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, গ্রামীণ খেলাধুলার অতীত ঐতিহ্য ছিল আমাদের গ্রামের। কিন্তু এখন খেলাধুলা নেই। তবে দেদারসে চলছে মাদকের কারবার।
স্থানীয় ওই বাসিন্দারা জানান, আগে গ্রামের দু’একজনের বিরুদ্ধে গাঁজা আর বাংলা মদ সেবনের অভিযোগ পাওয়া যেতো। কিন্তু এখন ইয়াবা, ট্যাপেনডা ট্যাবলেট ও গাঁজায় সয়লাব হয়ে গেছে এলাকা। এ সব নেশার দ্রব্যের ব্যবসায়ি ও খরিদ্দার (সেবনকারী) উঠতি কিশোর-যুবকেরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুরাতন চড়াইকোল গ্রামের মৃত এক স্কুল শিক্ষকের ছেলে ইয়াবার বড় কারবারি। কয়েক বছর যাবৎ চলছে তার এই অবৈধ ইয়াবার ব্যবসা। রাজধানী ঢাকা সহ নিজ এলাকায় একাধিক বার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আটক হয়েছে। জামিনে মুক্তি পেলে আবারো শুরু করে একই ব্যবসা। সে নিজে সহ কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে।
পুরাতন চড়াইকোল গ্রামের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ইয়াবা ব্যবসায়ী নিশান (২৩)। সে শিবরামপুর গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে। তার সাক্ষাৎ পেতে খোঁজ করা হয়। তাঁকে কোথাও পাওয়া যায়নি। তবে পৌরসভা এলাকায় তার বাবার সাথে সাক্ষাৎ হয় এ প্রতিবেদকের।
আলাপকালে ওয়াজেদ জানান, ছেলেটার চিন্তায় একেবারে শেষ হয়ে গেলাম। ছেলেকে নিয়ন্ত্রণের অনেক চেষ্টা করেছি। ব্যর্থ হয়ে নিজেই অভিযোগ করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছি। কিন্তু মাদক কারবারিরাই জেল থেকে বের করে নিয়ে আসে।
পুরাতন চড়াইকোল গ্রামের বাসিন্দারা জানান, তারা গ্রামের লোকজন নিয়ে সভা ডাকবেন। প্রয়োজনে প্রশাসনের কাছেও যাবেন। গ্রামে ইয়াবা কারবারিরদের কাছে বহিরাগত লোকজন আসা যাওয়া করে।
আরও পড়ুন – ঝিনাইদহ আড়াই’শ বেড হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে
জানাগেছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে মাদক বেচাকেনার বিরোধের জেরে রবিন ও নিশান বুজরুক বাঁখই গ্রামের রাশেদুলের ছেলে নিরীহ কলেজ ছাত্র রায়হান (২২) কে কুপিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় রায়হানের মাথায় ও পায়ে ১২ টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে রায়হান কুমারখালী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
ইয়াবা কারবারি রবিনের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেন এবং পরিচয় জনার পর কেটে দেন। সেকারণে এবিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
দুর্গাপুর গ্রামের একটি জামে সমজিদের ইমাম মুঠোফোনে অভিযোগ করে বলেন, এই এলাকার যুব সমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তাদের অধিকাংশই গাঁজ, ট্যাপেনডা সহ নানা ধরণের নেশায় আসক্ত। তারা এলাকায় বহিরাগতদের নিয়ে মাদক সেবন করে। চুরি, ছিনতাইয়ের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। ওরা স্থানীয় কারো শাসন-বারণ মান্য করে না। এদেরকে ভালোর দিকে ফেরাতে হবে এখনই, অন্যথায়, এলাকার শান্তি -শৃঙ্খলা চরম হুমকিতে পড়বে।