কুমারখালীর সেই পরিষদের তালা খুললেও সেবা চালু হয়নি

0
67

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ৮ নম্বর যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান ফটকের তালা অবশেষে খোলা হয়েছে। তবে সেবা গ্রহীতাদের ভোগান্তি কমেনি।

সোমবার দুপুর ১২ টা ১৩ মিনিটের দিকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা তালা খুলে দেন। তবে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এখনো ঝুলছে তালা। আবার পরিষদেও আসেননি চেয়ারম্যান। সেজন্য সব ধরনের সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফিরে যাচ্ছেন সেবা প্রত্যাশীরা।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সোমবার ১১ টা ৫৩ মিনিটের দিকে পরিষদ চত্বরে আসেন কুমারখালী থানার ওসি মো.সোলায়মান শেখ। তিনি এসে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে বৈঠক করেন। বৈঠকে বক্তব্য রাখেন যদুবয়রা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম আসাদ, ইউনিয়নের যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম, যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর মেম্বর আনিছুর রহমান, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বর আব্দুল মালেক প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে,পরিষদ চত্বরে নিষিদ্ধ সংগঠনের জন্মদিন উদযাপনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রহণ, আওয়ামী লীগের দোসর পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানকে অপসারণের দাবি জানান। দাবি পূরণের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে পরিষদের প্রধান ফটকের তালা খুলে দেন নেতারা। তবে দাবি পূরণের আগ পর্যন্ত চেয়ারম্যান কক্ষের তালা খুলে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

তারা আরও জানায়, গত শনিবার রাত ৮ টার দিকে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ছাত্রলীগের ৭৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কেক কাটার ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচার হলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। প্রতিবাদে ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা রাতে চেয়ারম্যান কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। রবিবার দুপুরে সেখানে পরিষদ থেকে সচিব, গ্রাম পুলিশ ও সেবা প্রত্যাশীদের বেড় করে প্রধান ফটকের গেটে তালা লাগিয়ে দেন নেতা-কর্মীরা।

সোমবার দুপুর ২টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পরিষদে ছাদে উড়ছে পতাকা। প্রধান গেট অন্যান্য কক্ষ খোলা থাকলেও চেয়ারম্যানের কক্ষে ঝুলছে তালা। আর কক্ষে বসে সচিব সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলছেন।

এসময় চৌরঙ্গী বাজারের মেসার্স ভাই ভাই ট্রেডার্সের মালিক ইয়াসির আরাফাত বলেন, ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ। নবায়ন করার জন্য এসেছি। তবে চেয়ারম্যান না থাকায় সেবা বন্ধ। ফিরে যাচ্ছি।

পরিষদের সচিব রেজাউল ইসলাম বলেন, পরিষদের তালা খুললেও চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা রয়েছে। চেয়ারম্যানও নেই। সেজন্য সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন গ্রাহকরা। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে সেবার কার্যক্রম চালু করা হবে।

যদুবয়রা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম আসাদ বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠনের জন্মদিন উদযাপনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, আওয়ামী লীগের দোষর পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে প্রশাসনের কর্মকর্তারা আশ্বস্ত করায় কার্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে। ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। থানাতেও অভিযোগ দেওয়া হবে।
যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান ফোনে বলেন, কার্যালয়ে তালা থাকায় এবং পরিস্থিতি কিছুটা অশান্ত থাকায় পরিষদে যাওয়া হয়নি। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলায়মান শেখ বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে পরিষদের তালা খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন – ঝিনাইদহে সাংবাদিকরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগটি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। দ্রæত সেবা চালুর ব্যবস্থা করা হবে।

আরও পড়ুন – খোকসায় জাবাল-ই-নূর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উদ্বোধন

জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, পরিষদে সেবা বন্ধ থাকার সুযোগ নেই। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।