দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক
কুমিল্লায় শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও বিক্ষোভ মিছিল দেখলেই তাদের লক্ষ্য করে হামলা ও গুলি ছুড়তে দেখা গেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ৮ ছাত্র গুলিবিদ্ধ ও প্রায় ২৫ জন এর বেশি শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে শিক্ষার্থীরা গণমিছিল বের করে কান্দিরপার মোড়ে আসার চেষ্টা করলে এ মারধর শুরু করেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা জিলা স্কুলের সামনে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গান, কবিতা আবৃত্তি ও ¯েøাগান দিচ্ছে। এরপর, শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরের কান্দিরপাড় এলাকায় যেতে চাইলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ধাওয়া দেন।
এসময় স্থানীয় কুমিল্লার কাগজ পত্রিকার দুইজন সাংবাদিককে মারধর করে একজনের ফোন নিয়ে যান তারা। এছাড়াও আন্দোলনকারী নারী শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে চড়-থাপ্পড় ও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। হামলাকারীরা টাউনহল মোড় থেকে টমসম ব্রিজ রোডের সিএনজি স্টেশন, ভিক্টোরিয়া কলেজ গেইট, রাজগঞ্জ মোড়, জিলা স্কুল গেইটসহ বিভিন্ন গলিতে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে শর্টগান, রামদা, লাঠি নিয়ে মহড়া দেন পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক দেখলেই মারধর ও হুমকি দিতে থাকেন। ইত্তেফাকের কন্ট্রিবিউটর মানছুর আলম অন্তরকেও আওয়ামী লীগের একজন কর্মী লাঠি হাতে মারার জন্য তেড়ে আসেন।
আরও পড়ুন – ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ উত্তাল দেশ
এর আগে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কয়েক রাউন্ড গুলি করতেও দেখা যায়।
এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ৮ জন গুলিবিদ্ধ (ছররা গুলি) হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আকতার ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শেখ ফজলে রাব্বী। এছাড়াও প্রায় ২৫ জন এর অধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন, প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা। তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে তার পুলিশ লাইন ও শাসনগাছা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করার পর। তাদের আবার ধাওয়া দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এরপর থেকে কুমিল্লা জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও আওয়ামী লীগের এই সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন কোন উপস্থিতি লক্ষ করা যায়নি। বর্তমানে কুমিল্লা নগরীর অধিকাংশ মার্কেট ও দোকানপাট বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।