কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার সাথে খুলনা ও ফরিদপুর রূটে অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের বাস মালিক ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে দ্ব›েদ্বর জের ধরে শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন আপাতত দুটি রুটে এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে সমাধান না হলে কুষ্টিয়ার সাথে সারা দেশের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে।
কুষ্টিয়া জেলা বাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়- কয়েকদিন ধরেই ঝিনাইদহ শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে ফরিদপুরের ট্রিপ নিয়ে ঝামেলা চলছিল। এর জের ধরে গত ৫ এপ্রিল মধ্যরাতে ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে কুষ্টিয়ার গড়াই পরিবহনের স্টাফদের মারধর করেন ঝিনাইদহ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। এরই প্রতিবাদে শুক্রবার ভোর থেকে কুষ্টিয়া-খুলনাগামী গড়াই-রূপসা পরিবহন এবং কুষ্টিয়া থেকে ফরিদপুরগামী সকল যাত্রীবাহী বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন লাবলু জানান, ঝিনাইদহ শ্রমিক ইউনিয়ন বেশি ট্রিপের অন্যায় দাবীতে আমাদের শ্রমিকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধর ও বাস ভাংচুর করে। তারই প্রতিবাদে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
দুটি রুটে অনির্দিষ্টকালের এই বাস ধর্মঘটের কারণে বিশেষ করে রোজার মধ্যে যাত্রীরা চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন। হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধের কারণে অনেকেই বাস কাউন্টারে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। সকালে শহরের মজমপুর বাস ডিপো এবং শহরতলীর চৌড়হাস এলাকার বাস টার্মিনালে এই দুই রটে যাওয়ার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অনেকে যাত্রীকে।
কুষ্টিয়ায় শ^শুর বাড়ি খুলনার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শেখ আসলাম হোসেন নামে এক যাত্রী জানান, পরিবার নিয়ে খুলনায় যাওয়ার জন্য টিকিট কাউন্টারে এসে দেখি বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় তিনি এখন কিভাবে খুলনায় পৌছাবেন এনিয়ে চরম দু:শ্চিন্তায় পড়েছেন। তাঁর মতো অনেক যাত্রীকেই হঠাৎ ধর্মঘটের কারণে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টার দিকে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে কুষ্টিয়া থেকে ঝিনাইদহ যাওয়ার জন্য মজমপুর গেটে আসেন রতœা বেগম নামে এক যাত্রী। এসে জানতে পারেন বাস চলছে না। দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে কিভাবে গন্তব্যস্থল ঝিনাইদহে যাবেন এ নিয়ে চিন্তিত তিনি।
কুষ্টিয়া জেলা বাস-মিনিবাস মালিক গ্রæপের সভাপতি আক্তার হোসেন জানান, ঝিনাইদহ মোটর শ্রমিক নেতারা বাসের নতুন ট্রিপ দাবি করছেন। তাদের এই অন্যায় দাবির কারণেই মূলত দ্ব›েদ্বর সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে আমরা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বসি। এ সময় ঝিনাইদহ জেলার শ্রমিকরা কুষ্টিয়ার পরিবহন ষ্টাফদের মারধর করে এবং বাস ভাংচুর করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বাস শ্রমিক-মালিক গ্রæপ উভয় মিলে এই দুই রুটে বাস চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
তিনি আরও বলেন, খুলনা থেকে কুষ্টিয়ায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে ফরিদপুর রুটেও বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বাসের স্টাফদের মারধরের ঘটনায় জড়িতদের আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে গ্রেফতার না করা হলে আরো কঠোর আন্দোলন কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।