উপ-সচিবসহ পাঁচ নির্বাচনী কর্মকর্তার নামে মামলা
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ায় এনআইডি জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় শত কোটি টাকার জমি হাতিয়ে নেয়ার আলোচিত ঘটনায় এক উপসচিবসহ পাঁচ নির্বাচনী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত ৪ মার্চ কুষ্টিয়া মডেল থানায় চার জন এবং কুমারখালী থানায় এক জনের নামে মামলা দুটি দায়ের করেন জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই জাবিদ হাসান জানান, আলোচিত এ ঘটনায় একটি মামলায় আসামি করা হয়েছে ঢাকার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব নওয়াবুল ইসলাম, ফরিদপুরের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান, মাগুরা সদরের উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অমিত কুমার দাস ও কুষ্টিয়া নির্বাচন অফিস সহকারী জিএম সাদিক সত্যবাদী। একই দিনে অন্য একটি মামলা হয়েছে কুমারখালী থানায় যার নং ৪। এই মামলায় আসামী করা হয়েছে কুষ্টিয়া সদরের নির্বাচন কর্মকর্তা সামিউল ইসলামকে। ঘটনার সময় তিনি কুমারখালী উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা ছিলেন। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছেন।
জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান মামলা দুটি দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত বছর জালিয়াতির মাধ্যমে ৬ জনের এনআইডি পরিবর্তন করে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর গেট এলাকার প্রায় শত কোটি টাকা মুল্যের ১৭ কাঠা জমি আত্মসাৎ করার চেষ্টা চালায় প্রভাবশালী একটি চক্র। ওই সময় জমির মালিক ওয়াদুদ কুষ্টিয়া মডেল থানায় ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০-১২ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। এদিকে এনআইডি জালিয়াতির ঘটনায় নির্বাচন অফিসের পক্ষ থেকে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। এসব মামলায় দন্ড বিধির ৪২০, ৪৬৮/১০৯ ধারা ছাড়াও ২০১০ সালের ভোটার তালিকা আইন এবং ডিজিটাল নির্বাচন আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কুষ্টিয়া শহরের এন এস রোডে ওয়াদুদ ও তার পরিবারের এনআইডি কার্ড জালিয়াতি করে শত কোটি টাকার সম্মত্তি বিক্রি করে দেয় একটি জালিয়াতি চক্র। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া সহ সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশের তদন্তে একে একে বেরিয়ে আসতে থাকে জালিয়াতি চক্রের মুল হোতাদের নাম। এনআইডি জালিয়াতি করে শতকোটি টাকার জমি দখলের মুলহোতা কুষ্টিয়া শহরের বেঙ্গল হার্ডওয়্যারের মালিক ব্যবসায়ী মহিবুল এবং যুবলীগ নেতা আশরাফুজ্জামান সুজনসহ ৭ জন গ্রেফতার হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলার বিচার চলছে। বাকীরা এখনও পলাতক রয়েছে।
এামলার এজাহারে শতকোটি টাকার জমি দখল ও এনআইডি জালিয়াতি চক্রের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়নকারী হিসেবে এসব নির্বাচনী কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্তে তাদের সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় এখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হলো বলে জানান বাদী জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান।