কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ায় পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় নিহত নারী শিশুসহ তিনজনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সোমবার বাদ জোহর নিহত আসমা খাতুন, তার শিশু পুত্র রবিন এবং প্রেমিক শাকিল খানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় রবিবার রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় এএসআই সৌমেন রায়কে এক মাত্র আসামি করে নিহতের মা হাসিনা বেগম হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-৩৯।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও তাপস কুমার সরকার জানান, নিহত তিন জনের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে রোববার রাত ১২ টার পর স্ব স্ব পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। রাতে নিহত শাকিলের লাশ তার পিতা মেজবার রহমানের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অন্যদিকে নিহত আসমা খাতুন এবং তাঁর ছয় বছর বয়সী শিশু পুত্র রবিনের লাশ হাসিনা বেগমের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নিহতদের পারিবারিক সূত্র জানায় সোমবার বাদ জোহর নিহত আসমা খাতুন ও তাঁর শিশু পুত্র রবিনের জানাজা শেষে নিজ গ্রাম কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের নাতুড়িয়া কবর স্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। একই সাথে নিহত শাকিল খানের নিজ গ্রাম কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের সাঁওতা কারিগর পাড়া গ্রামের মেছের উদ্দিন দারুল উলুম কওমীয়া মাদ্রাসায় জানাজা শেষে সাঁওতা কারিগর পাড়া গোরস্থানে দাফন করা হয়।
ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় খুলনা ফুলতলা থানার এএসআই সৌমেন রায়কে একমাত্র আসামী করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের মা।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাব্বিরুল আলম মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হত্যাকান্ডের ঘটনায় চাকরি থেকে সাময়িক বহিস্কৃত এএসআই সৌমেনকে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনের ডিবি কার্যালয়ে রেখে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ হেফাজতে থাকা সৌমেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, তাঁর স্ত্রী আসমার সঙ্গে শাকিলের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের ঘটনায় তিনি তাঁর স্ত্রীর ওপর চরম প্তি ছিলেন। রবিবার ভোরে তিনি খুলনা থেকে বাসযোগে কুষ্টিয়ায় আসেন। এ সময় তিনি তাঁর পিস্তল ও দুটি ম্যাগাজিনে ১২টি গুলি সঙ্গে নিয়ে আসেন। সৌমেনের ভাষ্য অনুযায়ী, সেখানে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে প্রথমে শাকিলকে গুলি করেন তিনি। এরপর আসমাকে গুলি করেন। এ সময় শিশু রবিন দৌড়ে পালাতে গেলে তাকেও গুলি করেন। একটি ম্যাগাজিনের গুলি শেষ হয়ে গেলে আরেকটি ম্যাগাজিন ব্যবহার করেন। জিজ্ঞাসাবাদে এএসআই সৌমেন এমন তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) ফরহাদ হোসেন খান।
কুষ্টিয়ার হালসা পুলিশ ক্যাম্প থেকে কিছু দিন আগে সৌমেন রায়কে খুলনার ফুলতলা থানায় বদলী করা হয়। তাঁর বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার আসপা গ্রামে। সৌমেনের প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং দুটি সন্তান রয়েছে। তাঁদের কাছে গোপন রেখেই গত বছর দেড়েক আগে আসমাকে বিয়ে করেন এএসআই সৌমেন রায়।