কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিযায় হঠাৎ করেই শিশুদের নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডা জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে একশ শিশু নিউমোনিয়া কিংবা জ্বর, ঠান্ডা, কাশি শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এ হাসপাতালের ২০ শয্যার বিপরীতে ৪শ’র অধিক শিশু ভর্তি থাকছে।
বিগত একমাস ধরে জেনারেল হাসপাতালে এই অবস্থা বিরাজ করছে। এদিকে হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় সেবা দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক-নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের। শয্যা সংকটের কারণে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শতশত শিশু রাগীদের।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: তাপস কুমার সরকার জানান, সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শিশুদের ঠান্ডা জনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভিড় শুরু হয়। তবে চলতি অক্টোবর মাসের শুরু থেকে হাসপাতালে শিশু রোগীদের চাপ রকম বৃদ্ধি পেয়েছে। গেল দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন গড়ে ৪ শতাধিকেরও বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকছে। আর গড়ে প্রতিদিন নতুন করে শতাধিকেরও বেশি শিশু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। আক্রান্ত শিশুদের অধিকাংশই নিউমোনিয়া, ঠান্ডা-জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এছাড়াও হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্স (শিশু) ডা: মো: রকিউর রহমান জানান, বিগত বছরগুলোর তুলনা এ বছর শিশুদের ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা আশংকা জনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত কারণে শিশুরা এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বুধবার বিকেলে হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সামনের বারান্দাসহ মেঝে শিশু রোগীতে ঠাসা। বারান্দার পাশে মেডিসিন ওয়ার্ড এবং শিশু ওয়ার্ড ইউনিট-২ তে শিশু রোগী রাখা হয়েছে। গাদাগাদি করে সেখানে বিছানা ফেলা হয়েছে। ওয়ার্ডের ভেতরেও ভিড় দেখা গেছে।
বারান্দার মেঝেতে শুইয়ে রাখা আট মাসের শিশু ফাহিমের পাশে বসে আছেন মা মৌসুমী খাতুন। তিনি জানান, কয়েক দিন ধরেই তার ছেলের জ্বর। তবে কোনো উন্নতি না হওয়ায় বুধবার সকালে তিনি ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।
শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স সফুরা জানান, গত দুই সপ্তাহ যাবত শিশু রোগী ভর্তির হার অনেক বেশি। ওয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে ২০ গুণ বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে। এত বিপুল সংখ্যক রোগীকে সামাল দিতে চিকিৎসক নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে কেবিনসহ শয্যা আছে ২৪টি। গত দুই সপ্তাহ যাবত শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেড়েছে বহুগুনে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা। বুধবার (২৩ আগষ্ট) সন্ধ্যা ৬
আরও পড়ুন –কুষ্টিয়ার বিদ্যুৎস্পৃষ্টে স্বামী স্ত্রী ও কন্যার মৃত্যু
টা পর্যন্ত শিশু ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল ৪০১ জন। এর মধ্যে ছেলে শিশু ২৪৯ জন এবং মেয়ে শিশু ১৫২ জন।
অতিরিক্ত শিশু রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আই¯েøাাশন ওয়ার্ড কে শিশু ইউনিট-২ বানিয়েছেন।
শিশু ওয়ার্ডে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় আশপাশের ওয়ার্ডের মেঝেতেও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগী রাখার ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
শিশু রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে গত ১৪ অক্টোবর থেকে হাসপাতালের দ্বিতীয়তলায় ওটি’র সামনে একটি রুমে অস্থায়ী ভাবে শিশু রোগী রাখার ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: তাপস কুমার সরকার জানান, ২৫০ শয্যার বিপরীতে হাসপাতালে গড়ে এক হাজারেরও বেশি রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে থাকেন। এর বাইরেও প্রতিদিন বহির্বিভাগে আরো ৫ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।