কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়া চিনিকলের গুদাম থেকে প্রায় অর্ধশত মেট্রিক টন চিনি গায়ে হয়ে গেছে। এ ঘটায় একজনকে সাময়ীক বরখাস্ত করা সহ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গায়েব হয়ে যাওয়া চিনির বাজার মূল্য প্রায় ৩২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
চিনিকলের এমডি মোঃ রাকিবুর রহমান খান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার তাদের নজরে আসে। তাৎক্ষনিক ভাবে চিনিকলের স্টোর কিপার ফরিদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও চিনি উধাও হওয়ার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তিনি সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা গেছে, মাড়াই বন্ধ কুষ্টিয়া চিনিকলের স্টোরে প্রায় ১শ মেট্রিক টন চিনি মজুদ ছিল। পরিমাণ নির্ণয় ও পর্যবেণকালে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রায় ৫২ মেট্রিক টন চিনি ঘাটতি পান। বিষয়টি তাৎণিকভাবে মিলের এমডিকে অবগত করা হলে তিনি স্টোর কিপার ফরিদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এছাড়া চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন কর্তৃপকে চিঠি মারফত বিষয়টি অবহিত করেন।
এদিকে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে চিনিকলের মহা-ব্যবস্থাপক (কারখানা) কল্যাণ কুমারকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান বলেন, এটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র এ কাজ করে আসছিলো। মিল বন্ধ না হলে হয়তো বিষয়টা ধরা পড়তো না। তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন সিবিএ সভাপতি ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, ফ্যাক্টারি গোডাউন আর কর্মকর্তাদের কেউ কেউ জড়িত।
মিলের জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি গত বৃহস্পতিবারে নজরে আসে। সেদিনই ফরিদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত ও তদন্ত টিম গঠন করে কর্পোরেশনকে জানানো হয়েছে।
তিনি স্বীকার করেন, মিলের গোডউনের চিনি কখনো একেবারে শেষ হয়নি। এবার মিল বন্ধ হওয়ার পর চিনির স্টক শেষ হয়ে আসে। তাই রেজিষ্ট্রার ও গোডাউনের চিনির হিসাবে গরমিল পাওয়া যায়। তার পরিমাণ ৫০ টনের বেশি। তদন্ত চলছে, বিষয়টি উঠে আসবে। যারা জড়িত তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির দায়ে ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর কুষ্টিয়া চিনিকলের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মুর্শেদ (এমডি), সিবিএ সভাপতি ফারুক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানকে একযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গত ১৯ বছরে কুষ্টিয়া চিনিকলটিতে লোকসান হয়েছে ৪২০ কোটি টাকা। ফলে শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দৌরাত্ব, দুর্নীতি, ব্যবস্থাপনা ক্রুটি ও ক্রমাগত লোকসানে ২০২০-২১ অর্থ বছর মিলে আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।