ক্ষেতেই শুকাচ্ছে পাট, পানি নেই খান বিলে

0
58

স্টাফ রিপোর্টার

জমি থেকে পাট কাটার সময় পার হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু খাল বিলে পানি নেই। ফলে অনেক কৃষকের পাট ক্ষেতেই শুকুয়ে মারা যাচ্ছে। ধানা লাগানোর জন্য পাট কেটে জমি ফাঁকা করে অনেক চাষী কাঁচা পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পরেছেন। ফলে পাট চাষিরা লোকসানের আশঙ্কা করছেন।

খোকসা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি আবাদ মৌসুমে প্রায় ৪০১০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদে লক্ষমাত্রা ধরা হয়। কিন্ত প্রতি বছরের মত এবারও লক্ষা মাত্রা ছাড়িয়ে ৪০৩৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করে কৃষকরা। কৃষি বিভাগ প্রায় ২২৫০ জন কৃষকের মধ্যে সারবীজ সরবরাহ করা হয়। উপজেলায় প্রায় ৫৮,৯০০ বেল পাট উৎপাদনের টার্গেট করা হয়।

এ মৌসূমে বৃষ্টির অভাবে প্রতিটি পাটের জমিতে ৩ থেকে ৪ বার সেচ দিতে হয়েছে। অপর দিকে প্রচন্ড তাপদাহে পাট আবাদও ভালো হয়নি। ইতোমধ্যে পাট কাটার সময় পার হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে খান বিলে পানি না থাকায় এখনো ৮০ শতাংশ জমিতে পাট রয়ে গেছে। অনেকের জমিতেই পাটের পাতা ঝড়ে যাচ্ছে। কোথাও আবার পোকার অক্রমন হয়েছে। বেশরি ভাগ জমিতে পাটের মাঝখান থেকে শুকিয়ে লাল হয়ে যাচ্ছে।

সোমবার সরজমিন মালিগ্রাম, মির্জাপুর, সিংঘড়িয়া, মানিকাট গ্রাম সহ প্রায় ৭টি গ্রাম ঘুড়ে দেখা গেছে, সিংহ ভাগ জমিতে পাট দাঁড়িয়ে রয়েছে। কারো কারো জমিতেই পাট শুকিয়ে লাল হয়ে গেছে। অনেক জমিতে বিছে পোকায় পাটের পাতা খেয়ে ফেলেছে। কেউ কেউ ধান লাগানোর জন্য জমি ফাঁকা করার জন্য পাট কেটে রাস্তায় বা জমিতে পাতা ঝড়ানোর জন্য জাগ দিয়েছেন। এইসব পাট খাল বিলে জাগ দেওয়া হত। কিন্ত এ বছর বৃষ্টির অভাবে খাল বিলে পানি নেই। অনেকেই ডোবা জমিতে জমা বৃষ্টির পানিতে পাট জাগ দিয়ে ছিলেন। কিন্তু রৌদ্রতাপে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় তারা পরেছের আর এক বিপদে। লনেকেই দূর থেকে সেচের পানি কিনে জমিতে গর্ত করে পাট ধুয়ে তুলতে বাধ্য হয়েছেন। অনেক কৃষানীকে জমি থেকে শুকিয়ে মারা যাওয়া পাট গাছ নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা যায়। এ গুলো জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

আরও পড়ুন – ধরে নিয়ে খাবার টেবিলে বসিয়ে জাতির সঙ্গে মশকরা করবেন না – হাইকোট

মালিগ্রামের কৃষক শহর আলী। দুই বিঘা জমি ইজারা নিয়ে পাট চাষ করেছিলেন। প্রতিটি জমিতে ৪ বার করে সেচ দিয়েছেন। এতে তার ব্যয় বেড়ে গিয়ে দাড়িয়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকায়। এখন আবার পাট জাগ নেওয়ার পানি নেই। দূরে সিএন্ডবির খাদে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত শ্রমিক লাগছে। ফলে পাট চাষ করে এ বছর তার লোকসান গুনতে হবে।

একই গ্রামের জাহিরন, দেবর জমিতে শুকিয়ে মারা যাওয়া পাট কেটে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। কশুকিয়ে যাওয়া পাট ভাত রান্নার খড়ি তৈরী করবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ কুমার সাহা দাবি করেন, পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ জমি থেকে পাট কাটা হয়েছে। প্রতিবিঘা জমিতে ৯ থেকে ১০ মন হারে ফলন হচ্ছে।