স্টাফ রিপোর্টার
কুষ্টিয়ার খোকসায় স্বামীর অনৈতিক সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় গৃহবধূ জহুরা খাতুন (২৫) কে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় জড়িত স্বামী, শ্বশুর, ভাসুর ও জায়ের বিচারের দাবিতে মানব বন্ধন ও সমাবেশ করেছেন নিহতের বাবার পরিবার ও এলাকাবাসী।
শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে নিহত গৃহবধূর বাবার বাড়ি উপজেলার জয়ন্তী হাজার ইউনিয়নের কলমিপাড়ায় এ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে নিহতের ভাই আনারুল দাবি করেন, ভাবির নাজমা খাতুনের সাথে স্বামী ইমরান ওরফে ইমারতের অনৈতিক সম্পর্কে বাধা দিয়ে আসছিল জহুরা। এ ঘটনার জের ধরে গত ৮ মার্চ সন্ধ্যায় গৃহবধূ জহুরা খাতুনকে তাঁর স্বামী ইমরান ওরফে ইমারত, শ্বশুর আজগর বিশ্বাস, ভাবি (জা) নাজমা খাতুন ও ভাসুর শহিদুল বিশ্বাস মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যাকারীদের দ্রæত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান তিনি।
নিহতের বাবার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে আমবাড়িয়া ইউনিয়নের গোসাইডাঙ্গী গ্রামের আজগর বিশ্বাসের ছেলে ইমরান ওরফে ইারতের সাথে কলমিপাড়া এলাকার মৃত রহমত আলীর মেয়ে জহুরা খাতুনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় স্বামীকে মোটা অংকের যৌতুক দেওয়া হয়। স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে ভাবি নাজমা খাতুনের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে ইমরান ওরফে ইমারত। ভাবির সাথে অনৈতিক সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় গত ৮ মার্চ সন্ধ্যায় জহুরা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় ৯ মার্চ নিহত ভাই মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে খোকসা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামী সহ অন্যরা আত্মগোপন করেছে।
মামলার বাদী মনিরুজ্জামান বলেন, বিয়ের সময় তাঁর বোনের স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন মোটা অংকের যৌতুক নিয়েছে। তার পরেও পান থেকে চুন খসলেই জহুরার উপর শুরু হত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। একপর্যায়ে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১০ – ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি কসমেটিক্সের দোকান করে দেওয়া হয়েছে। তবুও নির্যাতন চলতে থাকে তাঁর বোনের উপর। এরই মাঝে বড় ভাইয়ের বউয়ের সাথে ইমরানের ।নৈতিক সম্পর্ক ধরা পড়ে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় তাঁর বোনকে আসামীরা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
তিনি আরো বলেন, থানায় মামলা করা হয়েছে। আসামীদের দ্রæত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান তিনি।
জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সকিব খান টিপু বলেন, মেয়েটি শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এমন ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
খোকসা থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, জহুরা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। থানায় মামলার পর শ্বশুর আজগরকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।