খোকসায় আগুনে পোড়া পরিবারটি পলিথিন টাঙ্গিয়ে বাস করছে

0
82

স্টাফ রিপোর্টার

বিদ্যুতের শট সার্কিটের আগুনে কৃষি শ্রমিক রওশন আলী ও তার দুই পুত্রের বসত ঘর, সমিতি থেকে ঋণ করে এনে রাখা নগদ টাকা সহ সব ভস্ম হয়ে গেছে। তার পর থেকে এক সপ্তাহের বেশী সময় ধরে খোলা আকাশের নিচে পলিথিন টানিয়া পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। তাদের সাহার্যে এগিয়ে আসেনি রসকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

খোকসা উপজেলা শোসপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বি-মির্জাপুর গ্রামের হতদরিদ্র কৃষি শ্রমিক রওশন আলী বুধবার (১৯ ফেব্রæয়ারি) দুপুরে নাতি নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ করে তার বাড়ির বিদ্যুতের শট সার্কিট থেকে মিটারের আগুন লাগে। মুহুত্যের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে তার গোটা বাড়িতে। ভস্মে পরিণত হয় ৫ রুমের আধাপাকা বসত ঘর, খাওয়ার জন্য রাখা ধান, পাট, আসবাবপত্র, সমিতি থেকে ঋণ করে এনে রাখা প্রায় ২ লাখ নগদ টাকাসহ প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল। অগ্নিকান্ডের সময় ঘর থেকে কিছুই বেড় করতে পারেনি স্থানীয় উদ্ধার কারীরা। পরনের কাপড় ছাড়া এই পরিবারের সদস্যদের আর কিছুই নেই।

অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষি শ্রমিকের ছোট ছেলে টিপু। সে পাখি ভ্যান কেনার জন্য তিন দিন আগে সমিতি থেকে ঋণ করে প্রায় ৭০ হাজার টাকা ঘরে রেখে ছিলেন। ভ্যানের জন্য কিছু টাকা বায়নাও করে ছিলেন। বাঁকী সব টাকাই পুড়ে গেছে। বড় ছেলে মহম্মদ আলীরও পুড়ে গেছে ব্যবসার প্রায় শোয়া লাখ টাকা।

বৃহস্পতিবার সরেজমিন গিয়ে দেখাযায়, কৃষি শ্রমিক রওশন আলীর পোড়া ঘরের প্রায় অর্ধশতাধিক সিমেন্টের খুটি দাঁড়িয়ে আছে। পশ্চিমের পাশের বারান্দায় প্রতিবেশীদের দেওয়া পুরাতন পলিথিন টাঙ্গিয়ে ছোট ছেলে টিপু তার স্ত্রী কে নিয়ে বসবাস করছেন। ঘর পোড়া আগুনের ধুয়ায় বড় ছেলে মহম্মদ আলীর একমাত্র ছেলে অসুস্থ হয়ে পরায় সে এক প্রতিবেশীর বাড়ির আশ্রয় নিয়েছেন। নিকট আত্মীয়রা ছায় সরিয়ে পোড়াটিন ও আসবাব পত্রের অবশিষ্ট অংশ বের করে উঠানে স্তুপ দিচ্ছেন।

গৃহকর্তার স্ত্রী বৃদ্ধা রাজিয়া জানান, তিনি পুকুরে গোসল করতে গিয়ে ছিলেন। প্রতিবেশীদের চিৎকারে তিনি ছুটে বাড়ির দিকে আসেন। ততক্ষনে আগুন তার গোটা বাড়িতে ছড়িয়ে পরেছে। গরু ছাগল ছুটা ছুটি করছিলো। লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে তার বাড়ির চার পাশ। তিল তিল করে গড়া ঘরবাড়ি চোখের সামনে পুরতে দেখেছেন, আর ডুক্কার পেরে কেঁদে ছিলেন।

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত রওশন আলীর ছোট ছেলে ভ্যান চালক টিপু জানান, ব্যাটারি চলা নতুন একটা ভ্যান কেনার জন্য দুই সমিতি থেকে প্রায় পৌনে এক লাখ টাকা লোন নিয়েছিলেন। তার প্রায় সব টাকাই পুড়ে গেছে। তার নতুন ভ্যান কেনার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেলো। মাঝখানে কিছু দেনা হলেন।

রওশন আলী বলেন, জীবন নিয়ে বেঁচে ফিরেছেন এটাই বড় কথা। তিনি নাতি নিয়ে ঘরে শুয়ে ছিলেন। প্রতিবেশীদের চিৎকারে তার ঘুম ভাঙ্গে। ঘর থেকে বেড় হতে না হতেই তার জীবনের সব অর্জন পুড়ে ছাই হয়েগেলো।

তিনি আরও জানান, ঘর-বাড়ি পোড়ার পর প্রতিবেশীদের দেওয়া খাবার খেয়ে বেঁচে আছেন। তারাই কিছু কাপড় দিয়েছেন। সরকারি কোন সহায়তা তিনি পান নি।

আরও পড়ুন – দলিল জালিয়াতির ঘটনায় সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কারাগারে

শোমসপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর আনারুল জানান, বাড়ির পাশেই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি শ্রমিক রওশন আলীর বাড়ি। অগ্নি কান্ডের সময় তিনি নিজের উদ্ধার কাজে ছিলেন। তার পিঠেও আগুনের আঁচ লেগেছে। পরিবারটির সবই পুড়ে গেছে। তাদের সরকারী সাহার্য পাওয়া খুবই জরুরী।