খোকসায় উদ্ধার করা মৃতদেহের পরিচয় মিলেছে

0
343

স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসার গ্রামের একটি পুকুর থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তির অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যক্তিকে কয়েক দিন এলাকায় ঘুড়তে দেখা গেছে বলে গ্রামবাসীরা জানান। মৃতদেহ উদ্ধারের চার ঘন্টা পর জানা গেলো তার আসল পরিচয়।

মঙ্গলবার সকালে জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নের মামুদানিপুর গ্রামের মেম্বর মজিবর রহমান মালের বাড়ি সংলগ্ন পুকুরে মৃতদেহটি দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে থানা পুলিশ ওই পুকুর থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। প্রথম অবস্থায় নিহত ব্যক্তির নাম পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তার বয়স ৫৫ বছরের একটু কমবেশি হতে পারে। তার পরনে একটি পঞ্জাবী ও জিনসের জ্যাকেট রয়েছে। মৃতদেহের শরীরের চামড়ায় পচন ধরেছে। তা থেকে প্রচন্ড দুরগন্ধ ছড়াচ্ছে।

মৃতদেহ উদ্ধারের প্রায় ৪ ঘন্টা পর বেলা পৌনে ১টার দিকে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওই নিহত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, উদ্ধার করা নিহত ব্যক্তির নাম আব্দুল মজিদ ওরফে সেন্টু। তিনি পাংশা উপজেলা মথুরাপুর গ্রামের মৃত এলাহী বস্কের ছেলে। নিহত ব্যক্তি মাছপাড়া ডিগ্রী কলেজের অফিস সহায়ক পদে চাকুরিরত ছিলেন। ১২/১৩ বছর আগে হৃদরোগের অপারেশনের পর তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরেন।

জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর ও পুকুরের মালিক মজিব রহমান মাল জানান, তিনি সকালে বাড়ির বাইরে ছিলেন। শিশুরা ছাগল রাখার সময় তার পুকুরে মরা মানুষ ভাসতে দেখে। এই খবর পেয়ে তিনি (মজিবর রহমান) বাড়ি ফিরে আসেন। পুলিশ এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করেছে। নিহত ব্যক্তিকে তিনিও চেন না। তবে শুনেছেন শুক্রবার দিনগত রাতে নিহত ব্যক্তি ফুলবাড়ি গ্রামের হামিদ মোল্লার পুকুরে পরে গিয়েছিল। সেখান থেকে গ্রামবাসী তাকে উদ্ধার করে। প্রাথমিক ভাবে সুস্থ করার পর তাকে শুকনো পোষাক পড়িয়ে দেয়। শেষ রাতে নিজের ভেজা কাপড় ফেলে রেখে সেখান থেকে বেড়িয়ে পরেন।

ফুলবাড়িয়া গ্রামের শরিফুর ইসলাম পাঠান জানান, শুরবার দিনগত রাত ২টার দিকে নিজের ঘরের পাশে পুকুর থেকে মানুষের গুংড়ানোর শব্দ শুনতে পান। তিনি প্রতিবেশী রাসু ও মাজেদকে নিয়ে পুকুর থেকে তাকে উদ্ধার করে আগুন জ্বেলে সুস্থ করার চেষ্টা করা করেন। এক পর্যায়ে নিজেদের পুরাতন কাপড় তাকে পরিয়ে দেওয়া হয়। শেষ রাতে স্থানীয় বাজারের নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিয়ে আসেন। তিনি আরও নিশ্চিত করেন এই ব্যক্তিকেই (নিহত) তিনি ও তার প্রতিবেশীরা সুস্থ করার চেষ্টা করেছিলেন। পরে সে নিজের ইচ্ছায় তার বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে তারা তাকে বাজার পর্যন্ত এগিয়ে দেয়।

নিহতের ছেলে ইয়ামিন জানান, তার বাবা প্রায়ই বাড়ি থেকে চলে যেতেন। আবার একাই ফিরেও আসতেন। এবারও ৫/৬ দিন দিন আগে বাড়ি ছাড়েন আর ফিরেনি। তারা বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন বলেও নিশ্চিত করেন।

আরও পড়ুন – কুষ্টিয়া বিএডিসি অফিসে দুদকের হানা

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম জানান, তিনি গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে নিহতের পরিচয় জানা যায়নি। প্রায় চার ঘন্টা পর নিহতের নাবালক ছেলে ইয়ামিন তার বাবার পরিচয় নিশ্চিত করেন। মৃত ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল বলেও তার পরিবার নিশ্চিত করেছে।