স্টাফ রিপোর্টার
কুষ্টিয়ার খোকসায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে শ্রেণিকক্ষে বক্তব্য দেওয়া শিক্ষক গনেষ দাসকে গ্রেফতারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।
রবিবার সকালে উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের পাইকপাড়া-মির্জাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গনেষ দাসের অপসারণ ও গ্রেফতার দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থী কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। ঘন্টা ব্যাপীচলা অবরোধের সময় সড়কে বাস ট্রাকের দীর্ঘ লম্বা লাইন পরে যায়। কয়েকশ যানবাহন আটকে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পরে যাত্রীরা। এ সময় পুলিশ ঘটনা স্থলে উপস্থিত থাকলেও তারা ছিল দর্শকের ভূমিকায়। পরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক ও দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তিÍর প্রতিশ্রুতি দিলে বেলা আড়াইটার পরে শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিন বিকালে জামায়াতে ইসলামী খোকসা উপজেলা শাখার নেতাকর্মীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের গ্রেফতার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছে। খোকসা বাস স্ট্যান্ডে অনুষ্ঠিত পথ সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা জামায়াতের আমির নজরুল ইসলাম, শেখ সাইদুল ইসলাম, সালাউদ্দিন প্রমুখ।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিদ্যালয়টির অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী হিমু ও সানি ইসলাম জানান, দূর্গা পূজার ছুটি শুরুর আগের দিন শিক্ষক গনেষ দাস ক্লাসে বক্তব্যের মধ্যে মহানবী ও ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কটুক্তি করেন। এ বিষয়ে তারা প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি বিচার না করায় তারা রাস্তায় নেমেছে। তারা ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজাহারুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের মুখে শিক্ষক গনেশ দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক নিজেদের মধ্যে আলোচনা ধর্মী অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কথা বলেন। এটা তার স্বভাবে পরিণত হয়েছে।
বিদ্যালরে প্রধান শিক্ষক আরিফুজ্জামান জানান, তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মত শিক্ষক গনেষ দাসের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। এ ছাড়া শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সে সন্তসজনক জবাব না দিতে পারলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খোকসা থানার ওসি তদন্ত আব্দুল গফুর জানান, দুপুরেই সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি শান্ত আছে। শিক্ষক গনেষ দাসের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। শিক্ষক গনেষ আত্মগোপনে চলে গেছে। তাকে আটকের পক্রিয়া চলছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেশমা খাতুন মাইকে ঘোষনা দেন, ৬ থেকে ১২ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষকে আটক করা হবে। তবে তার বক্তব্য নেওয়ার জন্য সরকারী মুঠো ফোনে কল করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
আরও পড়ুন – মুন্নাফ আলীর বাঁশের চরাটের হালখাতা
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক মামলাও দিয়েছেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের জন্য ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আদেশ দেওয়া হয়েছে।