স্টাফ রিপের্টার
কুষ্টিয়ার খোকসা খেয়া ঘাটের মালিকানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে সন্ত্রাসীরা রাত ভোর গুলি ও বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে প্রতিপক্ষের বসত বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাল্টা অভিযোগে খেয়া ঘাট বন্ধ করে জনভোগান্তি সৃষ্টি।
বুধবার দিনগত রাতে উপজেলা ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়ায় এ তান্ডব চালায় অস্ত্রধারীরা। হামলা চালায় ঘাটের ১১ ভাগের একাংশের মালিক পাপ্পুর বাবা ওয়াজেদ আলীর (সাবেক মেম্বর) বসত বাড়িতে। এই বাড়ির মধ্যেই কমপক্ষে ৫ রাউন্ড বন্দুকের গুলি ছোড়ে অস্ত্রধারীরা। ভাংচুর করে বৃদ্ধ ওয়াজেদ আলীর বসত বাড়ির টিনের বেড়া। সেমিপাকা বসত ঘরের একাধিক জানালা। প্রায় ১ ঘন্টার বেশী সময় ধরে ২০/২৫ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রাম জুড়ে মহড়া দেয়। তার কমপক্ষে তিনটি বড় বোমা ও ১৫ রাউন্ড গুলি ছুড়ে গোটা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর রাতেই পুলিশ ঘটনা স্থালে উপস্থিত হয়। ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে।
এ ঘটনার সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে প্রতিপক্ষের লোকজন ঘাটের ম্যানজার শিহাব হোসেনের উপর হামলা করে বেধরক মারপিট করে। তাকে নদী পার হয়ে ঘাটে আসতে বাধা দেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘাটের কর্মচারীরা নদীতে খেয়া পাড়াপার বন্ধ করে দেয়। এ ভাবে চলে সকাল সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত। এ সময় প্রাইভেট পড়তে আসা কয়েকশ শিক্ষার্থী, চিকিৎসা নিতে আনা রোগী, অফিস ও বাজার মুখি কয়েকশ শ্রমিকদের নদীর ঘাটে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের ১১ টি গ্রামের মানুষসহ আশে পাশের কয়েকটি জেলার সাথে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে গড়াই নদীর খোকসা খেয়া ঘাট। ৫ আগস্টের পর ঘাটটি নতুন করে ইজারা দেওয়া হয়। এ সময় নদী পাড়ের গ্রাম গুলোর প্রভাবশালীরা যৌথ ভাবে খেয়া ঘাট ইজারা নিয়ে নেয়। মাস পেরুতেই ঘাটের টাকা ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে মালিকদের সাথে বিরোধের শুরু হয়। এ ঘটনার জের ধরে ইজারাদার ফরহাদ হোসেনের সাথে প্রতিপক্ষের বিরোধ চরমে পৌছায়। এ নিয়ে দফায় দফায় উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে। হামলা পর্যন্ত পৌচ্ছে।
খোকসা খেয়া ঘাটের ইজারাদারের ভাই সান্টু ও লিটন জানায়, প্রতিপক্ষের লোকেরা খেয়া ঘাটের একক কর্তৃত্ব নেয়ার জন্য চেষ্টা করছে। পাপ্পু ও তার বাহিনী কয়েকদিন ধরে হুমকী ধামকী দিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে ঘাটের ক্যাশ থেকে জোর করে ১০ হাজার টাকা দিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে তাদের ম্যানেজারকে মেরে হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। তারা আরো জানায়, পাপ্পু তাদের ম্যানেজারের কাছে একটি বন্দুক কেনার টাকা চাঁদা দাবি করেছে। না দিলে তার হাত পা ভেঙ্গে দেবে বলেও হুমকী দেওয়ার অভিযোগ করেন।
খেয়া ঘাটের ইজারাদারের অংশিদার পাপ্পু বাবা ওয়াজেদ আলী ও মা আনোয়ারা বলেন, ছেলের সাথে ঘাটের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে বিরোধ চলছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ তার ছেলের পাপ্পুর নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়া হলে বুধবার দিনগত রাতে প্রতিপক্ষ অস্ত্রধারীদের দিয়ে তার বাড়িতে হামলা করেছে। ভাংচুর করেছে। বাড়ি মধ্যে দাড়িয়ে কমপক্ষে ৫ রাউন্ড বন্দুকের গুলি ছুড়েছে। এ হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর জহুরুল ইসলাম বলেন, দুই গ্রæপের ভাগ বাটোয়ারার বিরোধ। মাঝে মাঝেই রাত ভোর দুই গ্রæপ তান্ডব চালায়। বৃষ্টির মত গুলি ছোড়ে। আর খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে তিনি নিজেও স্ত্রী সন্তান নিয়ে দূরে আশ্রয় নেন।
আরও পড়ুন – ঈদুল ফিতরে টানা ৯ দিন ছুটি হতে পারে
থানা ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম বলেন, ঘাটে কোন ঘটনা ঘটেনি। ডাঙ্গায় ঘটেছে। এ নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি।