স্টাফ রিপোর্টার
৪৮ বয়স বয়সী আহত নারী গত পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন। তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে এক প্রতিবেশী প্রকাশ্য রাস্তায় ফেলে তাকে পিটিয়েছে। পরে স্বামী সন্তানের সামনে ধারালো অস্ত্রদিয়ে ওই নারীর পরনের পোষাক কেটে বিবস্ত্র করে ফেলা হয়। হামলাকারীরা গৃহবধূকে নির্যাতনের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড গোসাইডাঙ্গীর কলমিজুলা গ্রাম। এ গ্রামের ওই নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামীর বাড়ী। তার স্বামী একটি বেসরকারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। প্রতিবেশী মুন্নাফের স্ত্রী বুলবুলির সাথে তার স্ত্রী’র বিরোধ হয়। এ বিরোধের সূত্রধরে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গ্রামের একটি মুদি দোকানে স্থানীয়দের সামনে গৃহবধূ উপর হামলা করে প্রতিপক্ষ। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে গৃহবধূর পরণের পোষাক কেটে বিবস্ত্র করে ফেলে। পরিবারের লোক ও স্থানীয়রা আহত গৃহবধুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। তাকে মহিলা ওয়ার্ডের ৭ নম্বর বিছানায় ভর্তি রাখা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ নিজে উঠে ঠিকঠাক বসতে পারছেন না। হামলার সময় মাথায় আঘাত পেয়েছেন। চোখ মেলে তাকাতে কষ্ট হচ্ছে তার। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে তার স্বামী থানায় মামলা করেছেন। এ মামলা বাদি হয়েছেন আহত গৃহবধূর স্বামী। গৃহবধূ নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করার সাথে জড়িত ব্যক্তিকে পুলিশ এখনো চিিহ্ণত করতে পারেনি। তবে প্রধান আসামী একই গ্রামের মুসান প্রামানিকের ছেলে আকাম উদ্দিন কে পুলিশ আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে হামলার ঘটনার রোমহস্যক বর্ণনাদিলেন গৃহবধূ। কথা চালা-চালি নিয়ে বুলবুলির সাথে তার ঝগড়া হয়। দুপুরের দিকে তিনি খবর পায় দোকানের তার স্বামীর উপর হামলা করা হয়েছে। তিনি সেখানে পৌছানো মাত্র আকাম উদ্দিন তার মাথায় হাসুয়া দিয়ে আঘাত করে। এ সময় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পরলে। স্বামী সন্তান ও স্থানীয়দের সামনে হামলা কারী তার গায়ের ম্যাক্সিটি (পরনের জামা) ধারালো অস্ত্র কেটে কয়েক টুকরা করে ফেলে। বিবস্ত্র হয়ে পরেন গৃহবধূ। এ সময় হামলাকারীদের একজন বিবস্ত্র গৃহবধূর ভিডিও ধারণ করে। পরে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
আহতের স্বামী ঘটনার দিন খোকসা থানায় আকাম উুিদ্দন ও অপর একজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ভিডিও ধারণকারীসহ ও মামলার অপর আসামী আটক না হওয়ায় তিনি নিজে ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবনায় পরে গেছেন। তিনি দোষিদের শাস্তি দাবি করেন।
যাকে নিয়ে এক গৃহবধূকে রাস্তায় জনসমুখ্যে হামলা ও বিবস্ত্র করে হামলা করা হয়। সেই গৃহবধূ চার সন্তানের মা বুলবুলি দাবি করেন, প্রতিপক্ষ পরিকল্পিত ভাবে তার চাচা শ্বশুর আকাম উদিনের উপর হামলা করেছে। উল্টো তার আবার (আকামের) বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তিনি নিজেও ঘটনার দিন সকালে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন বলে দাবি করেন।
আহতের মেয়ে দাবি হামলাকারীরা তার বিবস্ত্র মায়ের ভিডিও ধারণ করে নিয়ে গেছে। তিনিও দোষিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন।
শুক্রবার দুপুরে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সিরাজ হামলার ঘটনার বর্ণনা দেন। আহতের স্বামীকে হামলাকারীরা দোকান উপর থেকে ডেকে সালিশী বৈঠকের কথা বলছিল। এ সময় গৃহবধূ সাহানাজ সেখানে উপস্থিত হলে তার উপর হামলা করা হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে সবার সামনেই গৃহবধূর পরনের ম্যাক্সি কেটে ফেলা হয়।
গৃহবধূকে বিবস্ত্রকরে পেটানোর মামলার তদন্তকারী খোকসা থানা পুলিশের এসআই নৃপেন্দ্র নাথ বলেন, মামলাটি তদন্ত চলছে। তিনি একাধিক বার ঘটনা স্থলে গেছেন। প্রধান আসামীকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা চালাছে।