খোকসায় দাদন ব্যবসায়ীদের নির্যাতনে ভ্যান চালকের মৃত্যুর অভিযোগ

0
176
khoksa-DROHO 30-P1
নিহত ভ্যানচালক মনিরুল

স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসায় দাদন ব্যবসায়ীদের নির্যাতনে এক ভ্যান চালকের মৃত্যু হয়েছে বলে নিহতের স্ত্রী অভিযোগ করছেন। থানা বলছে আপাতত অপমৃত্যু মামলা হবে।

পরিবারের অভিযোগ, দাদন ব্যবসায়ী চক্র পাওনা টাকা আদায়ের জন্য পাখি ভ্যানের চালক মনিরুল ইসলাম (৪২)কে বৃহস্পতিবার শোমসপুর বাজারের একটি ঘরে আটকে শারীরিক নির্যাতন করে। এ ঘটনার পর ভ্যান চালক বাড়িতে ফিরে অসুস্থ হয়ে পরেন। রাতেই তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর সে মারা যায়। নিহত ভ্যানচালক শোমসপুর ইউনিয়নের পদ্মবিলা গ্রামের কিতাব উদ্দিন শেখের ছেলে। সে দুই সন্তানের জনক।

ভ্যান চালক মনিরুলের মৃত্যুর পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে দাদন চক্রের নেতারা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দাদন ব্যবসায়ী ও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাদের ফোনে পাওয়া যায়নি।

khoksa-p2
নিহত ভ্যানচালক মনিরুলের পরিবার

নিহতের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা খাতুন অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার বিকালে দাদন ব্যবসায়ীরা তার বাড়িতে হানা দিয়ে হুমকী ধামকি দিয়ে যায়। এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় দাদন ব্যবসায়ী আলিফ খানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী তার স্বামীকে শোমসপুর বাজারে আটকে মারপিট করে। রাতে সে বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পরে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। স্বামী হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে শুক্রবার সকাল থেকে কয়েক দফাই থানায় গিয়েছেন তিনি কিন্তু তাকে বাব বারই ফেরত পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। স্বামীর হত্যার সাথে জড়িত দাদন ব্যবসায়ীদের বিচারের দাবিও করেন তিনি।

নিহতের বাবা জানান, করোনা কালে সংসারের তাগিদে তার ছেলে মনিরুল ইসলাম শোমসপুর বাজারের দাদন চক্রের নেতা আলিফ খানের কাছ থেকে ১৪হাজার ৫শত টাকা দাদন নেয়। ছয় মাসে সেই টাকা ৭০ হাজারে এসে দাঁড়ায়। ইতোমধ্যে এই দাদন চক্র ৪৫ হাজা টাকা দামের একটি গরু খুলে নিয়ে গেছে। এবার সে নিজের বাড়ির জমি থেকে ৩ শকত জমি বিক্রি করে দাদনের টাকা পরিশোধের চেষ্টা করছিল। আর এর মধ্যে দাদন চক্র পাওনা আদায়ের জন্য তার ছেলের উপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে। দাদন চক্রই তার ছেলে মৃত্যুর জন্য দায়ি বলেও সে দাবি করেন। এ ব্যাপারে পুলিশ তাদের কথা শুনছে না বলেও অভিযোগ করেন।

এসআই তুহিন জানান, ভ্যান চালকের মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হচ্ছে। ডাক্তারী পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর তখন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুমজ্জামান তালুকদার জানান, ভ্যানচালকের বিষপানে কারণ নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।