
ষ্টাফ রিপোর্টার
ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য মুজিব শতবর্ষের উপহার হিসেবে তৈরী করা দৃষ্টি নন্দন জনশুন্য বাড়ি গুলো দাঁড়িয়ে আছে। বরাদ্দও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দপ্রাপ্তদের অধিকাংশরা থাকেন না এই বাড়িতে। সুবিধাভোগীদের ঘর আছে, বাড়িও আছে। অভিযোগ উঠেছে রাজনৈতিক বিবেচনায় বাড়ি গুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ফলে বেশির ভাগ সুবিধাভোগী ঘর গুলোতে সিন্দুকে মত তালা ঝুলিয়ে রেখে আগের বাড়িতে বসবাস করছেন।
জানা গেছে, খোকসা উপজেলায় মুজিব শতবর্ষ উপল দুই শতাংশ খাস জমিতে ভূমিহীন ও গৃহহীন অর্থাৎ ক-শ্রেণি পরিবারের জন্য দুই ক বিশিষ্ট সেমি-পাকা একক গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৪২৪টি বাড়ি নির্মান করা হয়। প্রকল্পের নীতিমালার ফাঁক ফোঁকর দিয়ে সুবিধা ভোগী বাছায়ের দায়িত্ব স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কজ্বায় চলে যায়। কয়েক দফায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব প্রকল্প সুবিধাভোগীদের জমির দলিল ও বাড়ির চাবি হস্তান্তর করেন। ইতোমধ্যে কিছু ভূমিহীন ও গৃহহীন উপহারের বাড়িতে উঠেছেন। তবে ৩০ শতাংশ সুবিধা ভোগী বাড়িতে ওঠেন নি। ঘরের বারান্দায় গাদা করে রাখা হয়েছে খড়কুটো, খড়ি লাকড়ি। সন্ধা লাগলেই ফাঁকা বাড়ি গুলো সমাজ বিরোধীদের আখরায় পরিণত হয় বলে একাধিক বসবাসকারী অভিযোগ করেন।

শিমুলিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁতী পাড়া আশ্রয় প্রকল্প। এখানে ১২টি পরিবারের বসবাসের জন্য বাড়ি তৈরী করা হয়েছে। কয়েকমাস আগে সুবিধাভোগীদের কাছে এসব বাড়ির দলিল ও চাবি হস্তান্তর করা হয়। তবে শুধু মাত্র ৯ নন্বর বাড়ির বিদ্যুতের সংযোগ লাগেনি। প্রকল্পটিতে অঞ্জনা শর্মা, বৃদ্ধ শেফালী, টুকু, বিলকিস, আলামিন বসবাস করছেন। বাঁকী সুবিধাভোগীরা ঘরে তালা ঝুলিয়ে রেখে গেছে আর আসে নি।
এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী শিবু পদ। তিনি একই ইউনিয়নের কালিশংকরপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়ি বাস করেন। প্রকল্প এলাকা থেকে ৪ কিলোমিটার দূরের গ্রামে। পালে ৪টি গরু আছে। সংসার আছে। সে আশ্রয়ণে আসে কালেভদ্রে। আর এক সুবিধাভোগী জালাল। বাড়িতে জামাই মেয়ে এলে তিনি এসে এই বাড়িতে থাকেন। তারও ঘরবাড়ি সবই আছে। এই প্রকল্পের অপর সুবিধাভোগী আমেনা, আলীম, সাগর সবারই ঘরবাড়ি আছে। এ এখানে থাকেনা বলে স্থানীয়রা জানান।
খোকসা ইউনিয়নের মোড়াগাছা হ্যালিপ্যাডে একই প্রকল্পের আওতায় ৩০টি বাড়ি নির্মান করা হয়। সেগুলো প্রথম দিকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের চিত্র আরো করুণ। ঘর বরাদ্দ পেয়েছে সন্ত্রাসী ও রাজনৈতিক নেতাদের লোক। তাদের বেশির ভাগেরই ঘর বাড়ি আছে। ১০টির বেশী ঘর এখনো ফাঁকা। এই বাড়ি গুলো কেন্দ্র করে সন্ধার পরে অপরাধিদের আনা গোনা বেড়ে যায়া।
শিমুলিয়া তাঁতী পাড়ারর আশ্রয়নের বসতি অঞ্জনা শর্মা বলেন, সব বাড়িতে লোক থাকলে নিরাপদে থাকা যেতো। অধিকাংশ ঘরে কেউ থাকে না। রাতে ঘর থেকে বের হতে ভয়ে গা ভাড়ি হয়ে যায়। সবাই যে যার মত ঘরে সিন্দুকের মত তারা ঝুলিয়ে গেছে তো গেছে। এদিকে ফিরে-ফুচকিও দেয় না।
শিমুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, তার ইউনিয়নে মুজিব শতবর্ষের ঘর বরাদ্দে অনিয়ম হয়নি। ঘর পাওয়ারা অনেকেই ভাড়া বাড়িতে থাকেন। কেউ থাকেন শ্বশুর বাড়িতে। অনেকেই ঘরে যাচ্ছিল না বলেও স্বীকার করেন। তবে তিনি ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) চাপ দেওয়ার পর কয়েকজন ঘবে উঠেছে। বাঁকীরাও ঘরে উঠবে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিধান কান্তি হালদার বলেন, এমন অভিযোগ এই প্রথম শুনলেন। তিনি সরেজমিন ঘুরে ব্যবস্থা নেবেন।