স্টাফ রিপোর্টার
কুষ্টিয়ার খোকসায় সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে গৃহবধূকে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার গোপগ্রাম ইউনিয়নের সন্তোষপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। অপহরণ পর হত্যা চেষ্টা শিকার গৃহবধূ নাম সীমা (২৮)। তার দুই বছর বয়সী একটি শিশু কন্যা সন্তান রয়েছে।
গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সন্তোষপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের মেয়ে সীমার সাথে পাশের গ্রামের আফসার বিশ্বাসের ছেলে বটকল নামের একটি এনজিও’র কর্মী আতিয়ার রহমানের সাথে ৪ বছর আগে বিয়ে হয়। সম্প্রতি সময় আতিয়ার গোপনে আর একটি বিয়ে করার পর থেকে সীমার উপর নির্যাতনের মাত্র বেড়ে যায়। গত বছরের জুন মাসের দিকে গৃহবধূ সীমাকে শিশু সন্তান সহ বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এক পর্যায়ে ডিসেম্বর মাসের দিকে গৃহবধূকে তালাক দেয় স্বামী। বিষয়টি নিয়ে গৃহবধূ বাদি হয়ে আদালত মামলা করেন। প্রচন্ড ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে আতিয়ারে পরিবার।
এ ঘটনার সূত্র ধরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গৃহবধূ সীমাকে তার বাবার বাড়ির পাশের রাস্তা থেকে অপহরণ করে একটি মাঠে নিয়ে যায় দুর্বৃত্বরা। কাপড়ে মুখ বাঁধা দুর্বৃত্বরা প্রথমে গৃহবধূর কাছ থেকে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেবার চেষ্টা। এক পর্যায়ে তার শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে দেয়। এ সময় গৃহবধূর আত্ম চিৎকারে মসজিদ ফেরত নামাজিরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসে। গুরুতর আহত গৃহবধূকে রাতেই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গুরুতর আহত গৃহবধূ সীমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। সেও উত্তর দেবার চেষ্টা করে কিন্তু বলতে পারছিল না। তা দুই চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরছিল। খুব মৃদুস্বরে গৃহবধূ সীমা জানান সাবেক স্বামী তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে।
গৃহবধূর বাবা লুৎফর রহমান জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সীমা তার শিশুর খাবার কিনতে বাড়ির পাশের দোকানে যাচ্ছিল। ফাকা রাস্তা থেকে সাবেক জামাই আতিয়ার, তার ভাই সোহেল ও আল আমিন সীমাকে অপহরণ করে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে। মেয়ের চিৎকারে তারা ব্যর্থ হয়ে গলাই ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। নামারি মসজিদ থেকে মাগরিবের নামাজ শেষ ফেরার সময় অপহরণ কারীদের কবল থেকে সীমাকে উদ্ধার করে। তিনি মেয়ে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টার সাথে জড়িতদের বিচারের দাবি করেন।
উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ প্রতীক সাহা জানান, গৃহবধূর গলায় লালচে দাগ ও ফোলার চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মেয়েটির শরীরে কেরসিন তেলের গন্ধও ছিল। তার শ্বাস ও বাক যন্ত্রে সমস্যা দেখা দেওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়াতে রেফার্ড করা হয়েছে।