স্টাফ রিপোর্টার
শনিবার মধ্যরাতে খোকসা পৌরসভা নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হবে। শেষ মুহুত্যের প্রচারণায় ব্যস্ত প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের মেয়র ও কাউন্সিল প্রার্থীরা। তবে প্রচারণার শেষ সময়ে অনেকটা বাধাহীন ভাবেই একাএকা ভোটারদের সাথে দেখা করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফশীল অনুযায়ী আগামী ২৮ ডিসেম্বর খোকসা পৌর নির্বাচন ৪র্থ নির্বাচনের ভোট গ্রহন। ৯টি কেন্দ্রের ৬টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। নির্বাচন অবাদ নিরপেক্ষ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে বিশেষ আইন শৃঙ্খলা সভা করা হয়েছে। এ বছরই প্রথম ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোট গ্রহন হবে। ইতোমধ্যে ভোটিং মেশিন ও সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হয়েছে। ভোট গ্রহনের জন্য দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছ। শনিবার কেন্দ্রে কেন্দ্রে মগ ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার মধ্য রাত থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শেষ হবে। তাই শুক্রবার পর্যন্ত প্রার্থী ও তাদের কর্মীরা ভোটারদের সন্তুষ্টু করতে স্বচেষ্ট ছিল। বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নারী কর্মীদের দলে দলে উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তারিকুল ইসলাম দুই দিন আগে কাদিরপুরে পথসভার করেছেন। শুক্রবার সরাদিনই ভোটের মাঠে সরব ছিলে তিনি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী সদর উদ্দিন খান। দলবল নিয়ে করেছেন গণসংযোগ। এ দিন বিকালে নৌকা প্রতিকের পক্ষে প্রচারণায় যুক্ত হয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক জাহিদ হোসেন জাফর। তিনি খোকসা বাস ষ্টান্ড থেকে বাজার প্রর্যন্ত ভোটারদের সাথে গণসংযোগ করেছে।
পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে সারাদিন নির্বাচনী গণসংযোগ করেছেন নৌকার প্রতিকের প্রার্থী তারিকুল ইসলাম। মুঠোফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, নৌকার বিজয় নিশ্চিত। ভোটাদের নৌকা প্রতিকের প্রতি ব্যাপক সারা রয়েছে। দ্বিতীয়বার তার বিজয় নিশ্চিত বলেও তিনি দাবি করেন।
শুক্রবার অনেকটা বাধামুক্ত ভাবেই গণসংযোগ করেছেন বিএনপির মেয়র মেয়র প্রার্থী নাফিজ আহমেদ রাজু। তিনি একা একা ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটারদের সাথে দেখা করেছে। তাদের মধ্যে লিপ্লেট দিয়েছেন। এ দিনও (শুক্রবারও) উপজেলা বিএনপির অফিস বন্ধ ছিল। এ অফিসটি প্রায় এক মাসেরও বেশী সময় ধরে বন্ধ রয়েছে।
বিএনপির প্রার্থী নাফিজ আহমেদ রাজু বলেন, প্রতিপক্ষ ভোটারদের মধ্যে নানা শঙ্কা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। ভোটার যদি ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে তবে তিনি বিজয়ী হবেন বলে আশাবাদি।
প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত খোকসা পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একজন করে মেয়র, ৯টি ওয়ার্ডে ৩১ জন কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ডে ১০ জন মহিলা প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ বারে প্রার্থীদের জয় পরাজয় নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় নেই। তবে ভোটারদের মন জয় করতে মরিয়া সব প্রার্থী। পোষ্টারে পোষ্টারে ছেয়ে ফেলা হয়েছে প্রধান প্রধান সড়কসহ অলি-গলি। অনেক প্রার্থী নির্বাচনী অফিস করেছেন। সেখানে ভোটারদের চা পান সিগারেট ছাড়াও ভূড়ি ভোজের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। অনেক প্রার্থীর বিরুদ্ধে টাকা পয়সা দেওয়াও অভিযোগ রয়েছে।
ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইভিএম সম্পর্কে তাদের কোন প্রকার ধারণা নেই। তাদের কাছে এই মেশিনটি একেবারেই নতুন। ভোট দেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে ভোটারদের প্রশিক্ষন দরকার। তা হলেই ভোট নষ্ট কম হবে।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার রাশেদুল আলম এ প্রতিবেদকে জানান, ভোট গ্রহনের সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষন শেষ হয়েছে। শনিবার থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে ভোট প্রদানের কৌশল সম্পর্কে অবহৃত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
খোকসা থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, পৌর নির্বাচনকে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ৬টি কেন্দ্রকে অধিক ঝুকিপূর্ন ঘোষনা করা হয়েছে। এ সবকেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও আনসার থাকবে। স্টাইকিং ফোসের ব্যবস্থা থাকবে। ভোটে আগে ও পরে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার বলয়ে ঢেকে দেওয়া হবে।
খোকসা পৌরসভা নির্বাচনে প্রায় ১৪ হাজার ৯ শত ৩২ জন ভোটার ভোট দেবেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৪৩৭ জন ও মহিলা ভোটার সংখ্যা ৭ হাজার ৪৮৬ জন ।