খোকসা পৌর এলাকার ২ হাজার মানুষ পানিবন্দি

0
99

স্টাফ রিপোর্টার

খোকসা পৌর এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ডের নিন্মাঞ্চল বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে। অনেক বাড়ির রান্না ঘরে পানি ঢুকে পরেছে। সাপের উপদ্রপের সাথে বাড়ছে পানি বাহিত রোগ। এর সাথে যোগ হয়েছে ঘনঘন বিদ্যুত বিভ্রাট।

গত শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে উপজেলা সদরের পৌর এলাকার ৮, ৫, ৪ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সৃষ্টি হয়েছে জলা মগ্নতা। প্রায় ২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পরেছেন। অনেকের বাড়ির রান্না ঘর পানিতে ডুবে গেছে। ড্রেন উপচে একাধিক রাস্তা পানিতে নিমর্জিত হয়ে পরেছে। নিজেদের থাকা খাওয়ার স্থান সমস্যাসহ গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পরেছেন বেশিভাগ পরিবার। প্রতিটি বাড়ির উঠানে হাটু সমান পানি। টয়লেটের পানি ঢুকে পরছে থাকার ঘরে। সাথে বেড়েছে সাপের উপদ্রব। বৃষ্টি শুরু সাথে সাথে শুরু হয়েছে বিদ্যুত বিভ্রাট। ১০/১৫ মিনিটের জন্য বিদ্যুত দেওয়া হলেও বন্ধ রাখা হচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা। তবে পরøী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা দাবি বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়ার কারণে বিদ্যুতের লাইন টিকছে না।

রবিবার বিকালে পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ড়ে সবেজমিন গিয়ে দেখা য়ায়, এখানে শতাধিক পরিবার বৃষ্টির মৌসুমে শুরু থেকে জলাবদ্ধ হয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। এখানে পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে নির্মান করা ড্রেন রয়েছে। কিন্তু ড্রেনটি ময়লা আবর্জনায় ভরে যাওয়ায় পানি প্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে পরেছে। একাধিক বাড়ির রান্না ঘরে পানি ঢুকে পরেছে। ড্রেনের নোংরা পানি ঢুকে পরছে বসাসের ঘরে।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের স্বপ্না খাতুন। দুই সন্তান নিয়ে আধাপাকা বাড়িতে বসবাস করেন। এবারে প্রথম বৃষ্টির রাতেই তার রান্না ঘরে পানি ঢুকে পরেছে। এখন উননের (আখা) ঝিক জেগে আছে। অন্যের বাড়ির প্রসাব পায়খানার পানি তার থাকার ঘরে উঠে যাওয়ার মত হয়ে গেছে। সে সন্তানদের নিয়ে সবসময় নিজের ঘরে বন্দি হয়ে আছেন। প্রতিবেশীর বাড়িতেও একই রকম অবস্থা। পাড়ার কোথাও যাওয়ার উপর নেই। সব খানেই পানি।

 

স্বপ্নার প্রতিবেশী মধ্যবয়সী চারুবালা সাহা, পানি মারিয়ে নিজের বাড়ি ঢুকছিলেন। কিন্তু বাড়ির গেটের মধ্যে জ্যান্ত সাপ দেখে তিনি রাস্তায় ফিরে এসেছেন। জেগে থাকা ড্রেনের উপর দাঁড়িয়ে আছেন।

তিনি বলেন, পানি আর সাপ ব্যাঙ এক সাথেই এসেছে। প্রায় রাস্তার পানির সাথে সাপ ভেসে আসতে দেখেছেন তার মত অনেকেই।

ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, তার বাড়িটি পাকা। কিন্তু পানিতো পাকা কাচা দেখে ভাসায় না। অপরিকল্পিত ড্রেনের জন্য তারা বছরের তিন মাস পানি বন্ধি থাকে। আগে মাঠে পানিনেমে যেত কিন্তু এখন সব পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের ভোগান্তির অন্ত নেই।

আরও পড়ুন – জমি নিয়ে বিরোধ: মুখে সুপার গ্লু লাগিয়ে একজনকে হত্যা চেষ্টা

পৌর সভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসেম আলী জানান, পানি বেড় করার জন্য কেউ নিজের জমি কাটতে দেয় না। ফলে ওরা বছরের বেশীর ভাগ সময় পানিবন্দি থাকে।

খোকসা পল্লী বিদ্যুতের সাব জোনাল অফিসের দায়িত্বে থাকা এজিএম (কম) এমদাদুল হক বলেন, বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়ার কারণে একাধিক স্থানে গাছ পরে বিদ্যুতের তার ছিড়েছে। এ ছাড়া সর্টসাকিট হওয়ায় বিদ্যুতের লাইন টেকানো যাচ্ছে না।

খোকসা পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেসমা খাতুনের সাথে কথা বলার জন্য তার সরকারি মোবাইল ফোনে কল করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেনি।