খোকসা-সেনগ্রাম কালীতলা সড়কে পুকুরের সৃষ্টি হয়েছে

0
169

সংস্কার কাজ ৩ বছর ধরে টেন্ডার পুনঃটেন্ডারের মধ্যে আটকে আছে

স্টাফ রিপোর্টার

খোকসা-সেনগ্রাম কালীতলা সড়কের প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার জুড়ে খানাখন্দে সৃষ্টির ফলে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। সড়কটির একাধিক স্থানের মাটি সরে গিয়ে পুকুরের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটির সংস্কার কাজ ৩ বছর ধরে টেন্ডার পুনঃটেন্ডারের মধ্যে আটকে আছে। প্রকৌশলী দুষলেন নিয়োগ প্রাপ্ত ঠিকাদারকে।

খোকসা উপজেলার পদ্মা অববাহিকার আমবাড়িয়া ও জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নে ১২টিও বেশী গ্রামসহ পাংশা উপজেলার চর অঞ্চলের কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষরে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক খোকসা-সেনগ্রাম কালীতলা জিসি পাংশা সড়ক। প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির খোকসা রেল ষ্টেশন থেকে সেনগ্রাম কালীতলা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার জুড়ে খানাখন্দ আবার কোন কোন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে পুকুরের। সড়কটি দিয়ে ভারী যানবাহন তো দূরের কথা বাইসাইকেল চালানোও দুষ্কর হয়ে পরছে। ফলে কয়েক হাজার ছাত্র ছাত্রীসহ প্রায় ১৫ হাজার মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

উপজেলা প্রকৌশীর দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, খোকসা-সেনগ্রাম কালীতলা জিসি পাংশা সড়কটি সংস্কারের জন্য আরসিআইএফ প্রকল্পের অধিন তিন বছর আগে টেন্ডার আহবান করে এলজিইডি। কার্য়াদেশ দিতে বিলম্ব হওয়ায় সড়ক জুড়ে একাধিক পুকুরের সৃষ্টি হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনঃ স্টিমেট করার ধুয়োতুলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। সর্বশেষ চলতি বছরে ১০.৪৩৪ কিলোমিটার সড়ক সংস্কাররের জন্য দ্বিতীয় দফায় টেন্ডার হয়। জুলাই মাসের প্রধম দিন মীর হাবিবুল আলম এন্ড সৈকত এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ঠিকাদার নিন্মমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করে কাজ শুরুর চেষ্টা করে কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে বাধা দেওয়া হয়। এর পর তারা (ঠিকাদার) কাজ বন্ধ রাখে। ইতোমধ্যে সড়কের সৃষ্ট পুকুর গুলো আরো বড়ো হয়ে গেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবারও পুনঃস্টিমেটের জন্য আবেদন করেছে।

খোকসা রেল ষ্টেশন থেকে সেনগ্রাম পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কের সব টুকুই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তাহেরপুর গ্রামে মধ্যে সড়কের মাটি পাশের ডোবায় চলে যাওয়ায় প্রায় ৭০ ফুট লম্বা এলাকা জুড়ে বিশাল আকৃতির পুকুরে পরিণত হয়েছে। বর্ষা মৌসূমে সড়কের গর্তে পরে ৩০টিও বেশী দুর্ঘটনা ঘটেছে। গর্ভবর্তী মহিলা শিশুসহ কমপক্ষে ৫জন পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।

স্থানীয় মসজিদের মোয়াজিন সিরাজ উদ্দিন শেখে জানান, কয়েক বছর ধরের তিনি শুনছেন রাস্তার জন্য টাকা বরাদ্দা হয়েছে কিন্তু কাজ হয় না। কি কারণে কাজ হয় না এ নিয়ে তিনি শুনেছেন নানা গল্প। তারা চায় দ্রুত সড়কটির সংস্কার।

আমবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বিশু বলেন, চলাচল অযোগ্য সড়ক মেরামতের জন্য তিনি কর্মকর্তাদের কাছে বাববার ধর্না দিয়েছেন কিন্তু ফান্ড নেই বলে তারা জানিয়েছে। তিনি সড়ক সংস্কারের দাবি জানান।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান সাইদুর রহমান লালুর অভিযোগের অন্ত নেই। তিনি জানান, সড়কে যে গর্ত (পোট হোল) তৈরী হয়েছে সেগুলো সিডিউলে ধরা নেই। যে ভাবে সিডিউল করা হয়েছে সে ভাবে কাজ করলেও ৬ মাসের মধ্যে রাস্তা আবার নষ্ট হয়ে যাবে। তবে রবিবার সকাল থেকে তিনি কাজ শুরু করেছেন বলে জানা।

সড়ক সংস্কার কাজের তদারকির দায়েত্বে থাকা একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী কথা বলতে রাজি হন নি। তবে সাইফুল ইসলাম জানান, সব ব্যাপার নিয়ন্ত্রন করে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর। সেখানে কথা বলতে হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী আবুস সামাদ দুষলেন ঠিকাদিরকে। এই কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবারেও নিবার্হী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে কর্মকর্তা সরেজমিন ঘরে গেছেন। ৫ মাস আগে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটিকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। প্রথম দিকে ঠিকাদান অত্যন্ত নিন্মানের কিছু ইট এনে কাজ শুরুর চেষ্টা করেন। তিনি বাধা দেন। পরে আর ঠিকাদার কাজ শুরু করেনি। কিন্তু তারা কাজ শুরু না করে আবার রিভাইজ ষ্টিমেট চাচ্ছেন।