ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়নের শতাধিক বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধির ভাতার টাকা নগদ একাউন্ট থেকে তুলে নিয়েছে প্রতারক চক্র। ভুক্তভোগিরা এ বিষয় নিয়ে পুলিশের দারস্থ হয়েছেন।
ভাতা ভোগিদের অভিযোগ, স্থানীয় সাগান্না ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বর আব্দুল ওহাবের ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত রাজন নামে এক কলেজ ছাত্র এই টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন। ডাকবাংলা বাজারের নগদ এর এজেন্ট হবিবুর রহমানও স্বীকার করেছেন রাজন মাঝে মধ্যে এসে ভাতাভোগীদের টাকা উঠিয়ে নিয়ে যায়।
প্রতিবন্ধি ফেরদৌছি বেগম অভিযোগ করেন, রাজন তাদের বই ও সিমসহ মোবাইল নিয়ে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে একাউন্টে কোন টাকা নেই। টাকা তুলে দেওয়ার কথা বলে দুই’শ টাকাও নেয় রাজন। একই কথা জানান, বাথপুকুরিয়া গ্রামের বিধবা শামারুপ নেছা, একই গ্রামের আছিয়া বেগম, আমেনা খাতুন, প্রতিবন্ধি নুর আলম ও বাবুল। তাদের ভাষ্য কলেজ ছাত্র রাজন টাকা উত্তোলনের কথা বলে নিজেই তাদের টাকা তুলে নিয়েছেন। এই টাকা তুলে সে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনেছে।
আব্দুল খালেক নামে এক প্রতিবন্ধির পিতা জানান, ব্যাংক থেকে যখন টাকা প্রদান করা হতো তখন তাদের কোন টাকা খোয়া যায়নি। মোবাইল ব্যাংকিং চালু হওয়ার পর তাদের এলাকার বহু মানুষের ভাতা নগদ একাউন্ট থেকে হাওয়া হয়ে গেছে।
বিষয়টি নিয়ে কলেজ ছাত্র রাজন জানান, তিনি কারো টাকা উত্তোলন করেন নি। সামনে নির্বাচন, তাই প্রতিপরা আমার উপর এ রকম মিথ্যা দায় চাপাচ্ছে।
সাগান্না ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বর আব্দুল ওহাব বলেন, আসন্ন ইউপি নির্বাচন নিয়ে দলাদলির কারণে এ ধরণের মিথ্যা অভিযোগ থানায় দেওয়া হয়েছে। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো তার ওয়ার্ডেও নগদ একাউন্ট হ্যাক করে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা পুলিশ ফাড়ির এএসআই মাখন বিশ্বাস জানান, ভাতা ভোগিদের টাকা আত্মসাতের অীভযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি তিনি সরেজমিন তদন্ত করে দেখেছেন বাথপুকুরিয়া গ্রামের প্রায় ৭ জন বিধবাসহ বেশ কয়েকজন বয়স্ক ও প্রতিবন্ধি তাদের ভাতার টাকা পাননি। বিষয়টি প্রযুক্তিগত ও জটিল হওয়ায় তিনি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। পরে শনিবার উদ্ধতন কর্মকর্তারা ভুক্তভোগিদের থানায় ডেকে তাদের বক্তব্য শোনেন।
ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, সারা জেলা থেকে এ রকম শত শত অভিযোগ পাচ্ছি, কিন্তু তাদেরকে কোন সহায়তা দিতে পারছি না। কোন কোন উপজেলায় ৫% থেকে ১০% টাকা হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে।