ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচির প্রথম দিন পুলিশের সাথে ছাত্র-জনতার ব্যপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
রবিবার দুপুরে আন্দোলনকারীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে করতে থানায় প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এসময় সাংবাদিক ও আন্দোলনকারীসহ ৪০ জন আহত হন।
আহতদের মধ্যে ২৪ জনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ও ১৩ জনকে ব্যাপারীপাড়ার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
আহতরা হলেন, জান্নাতুল ফেরদৌস, সাবিক, সবুজ, আপন, মহিবুল্লাহ, আল-কাবির, মৃদুল, পারভেজ, সিফাত, পিকুল, ফয়সাল সোয়াদ, সজল রাব্বি, সাব্বির, রাজু, হাসিব, মেহেদী, আসিফ, নয়ন, আবিদ, সাগর ও শাওন।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ নুসরাত জাহান জানান, আহত শিক্ষার্থীদের বয়স ১৬ থেকে ২১ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে ১৩ জনের গায়ে রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়েছে। বাকীরা কাঁদানে গ্যাসে আহত হয়েছেন।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুরের ছবি তুলতে গিয়ে গনমাধ্যমকর্মী মেরাজ সুজন, কাজী একরামুল হক লিটু ও হাসান বিক্ষোভকারীদের হাতে আহত হন। এ সময় চুয়াডাঙ্গা বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থিত ‘ঝিনেদা টিভি’ নামে একটি অনলাইন ভিত্তিক মিডিয়া অফিসের গাড়ি ভাংচুর করা হয়। দুপুর ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন এলাকা বিক্ষোভকারীদের দখলে ছিল। জেলা সদরের সব পুলিশ এ সময় সদর থানার মধ্যে অবস্থান গ্রহন করে।
আরও পড়ুন – কুষ্টিয়া শহর রনক্ষেত্র, বঙ্গবন্ধুর মুরাল ভাঙচুর
রবিবার সকাল থেকেই ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন পয়েন্ট দখল করে নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। বেল ১১টা থেকে জেলা বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্ররা ঝিনাইদহ শহরে সমবেত হতে থাকেন। এরপর ঝিনাইদহ পাবলিক হেলথ জামে মসজিদ, আরাপপুর ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে এক যোগে ছাত্র জনতার বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। দুপুরের দিকে মিছিলটি পায়রা চত্বর থেকে থানার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষোভকারীরা জানতে পারে তাদের দুই শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করেছে। তাদের ছাড়াতে ছাত্র জনতা জোটবদ্ধ হয়ে থানায় প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় বিক্ষোভকারীরাও থানার মধ্যে অবস্থান নেয়া পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী শারমিন সুলতানা, রায়হান ও হুসাইন কর্মসুচি শেষ করার ঘোষনা দেয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বাড়ি ফেরার পথে পানি উন্নয়ন বোর্ড, দুর্নীতি দমন কমিশন, শহরের মডার্ন মোড়ে নির্মিত আ’লীগের সভামঞ্চ ও বিদ্যুত উন্নয়ন অফিসের সামনে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করতে দেখা যায়।