ঝিনাইদহে আমরণ অনশনে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী

0
139
অনশনে বসা ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় শিক্ষার্থী

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

চাকরির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিার্থী আমরণ অনশন শুরু করেছেন।

চাকুরি প্রার্থী আমরণ অনশনের বসা ওই শিক্ষার্থীর নাম শাহিন আলম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আলমপুর গ্রামের কৃষক আবদুল কাদের ও মোছা. ফারা বেগমের দ্বিতীয় সন্তান। আলমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় শাহিনের জ্বর হয়। ডাক্তার কবিরাজ দেখিয়ে জ্বর গেল। কিন্তু ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টি সম্পূর্ণ হারিয়ে যায়।

সোমবার সকালে ঝিনাইদহ জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তিনি এই অনশন শুরু করেন। সরকার একটি চাকরির নিশ্চয়তা না দেওয়া পর্যন্ত তিনি এক ফোঁটা পানি পান করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। অনশনে বসা শাহিন একটা হ্যান্ড মাইকে তার আবেদন তুলে ধরেছেন।

তিনি দাবি করেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির আবেদন করছেন কিন্তু প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে একটি চাকরিও তার হয়নি। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মেধাবী শিার্থী শাহীন আলম বলেন, চাকরি যদি নাই হবে তাহলে কেন সরকার লেখাপড়ার সুযোগ দিল। তিনি সমাজসেবা অধিদপ্তরের কারিগরি প্রশিক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টেলিফোন অপারেটর, বাংলাদেশ টেলিভিশনের টেলিফোন অপারেটর পদসহ বেশ কয়েটি দপ্তরে চাকুরির আবেদন করেন। লিখিত পরীায় পাশ করেছেন।

শাহীন বলেন, তিনি সমাজসেবা অধিদপ্তরের কারিগরি প্রশিকের পরীায় রিটেনে পাস করেছিলাম। এরপর বাদ পড়ে যাই। বাকিগুলোতে শ্রæতিলেখকের নানা সমস্যার কারণে ঠিকমতো পরীা দিতে পারিনি।

আরো পড়ুন – এ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন – হানিফ

করোনাকালীন দেশ বিদেশের ১১৩ জন শিার্থীকে অনলাইনে কম্পিউটার প্রশিণ দিয়ে সাড়া ফেলেন তিনি। অনলাইন মাধ্যমে এ প্রশিণ দিতে কারো কাছ থেকে কানাকড়িও নেননি তিনি। নিজে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, প্রশিণও দেন দেশ-বিদেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিার্থীদের। এ নিয়ে আলোচনায় উঠে আসেন তিনি।

আলমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় জ্বরে তার চোখ নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু পড়া লেখা ছাড়েন নি। সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিা কার্যক্রম পরিচালিত নড়াইল তুলারামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণিতে ভর্তি হন শাহিন। ২০১৩ সালে এসএসসি এবং ২০১৫ সালে ঝিনাইদহের মহেশপুর সামছুল হুদা খান মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাশ করেন। শাহিন আলমের স্বপ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন। কিন্তু টাকার বড় অভাব। বন্ধুদের কাছ থেকে নোট সংগ্রহ করে অন্যকে দিয়ে পড়িয়ে অডিও রেকর্ড করে নেন। ওই রেকর্ড শুনে শুনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীায় মেধাতালিকায় স্থান করে নেন। ব্র্রেইল পদ্ধতি ব্যবহার করে পড়ালেখা শুরু করেন তিনি। অদম্য মেধাবী শাহিন বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রিসোর্স সেন্টারের কম্পিউটারে খন্ডকালীন প্রশিণ শেষ করেন।