ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কথিত সামরিক কমান্ডার ও মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি হানিফ তার দুই সঙ্গীসহ খুন হয়েছে। এ হত্যার দায় স্বীকার করেছেন স্থানীয় জাসদ গনবাহিনী।
অপর নিহতরা হলেন- হাফিনের শ্যালক শ্রীরামপুর গ্রামের উম্মাদ আলীর ছেলে লিটন এবং কুষ্টিয়া ইবি থানার পিয়ারপুর গ্রামের রাইসুল ইসলাম। নিহতরা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টিতে যুক্ত ছিলেন।
শনিবার (২২ ফেব্রæয়ারি) নিহতদের স্বজনরা তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শুক্রবার রাতে শৈলকুপা উপজেলার ত্রিবেনী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর শ্মশানঘাট এলাকার একটি ক্যানালের পাশ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে। তিনজনের মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে। পাশে দুইটি মটরসাইকেল ও নিহতদের ব্যবহৃত হেলমেট পড়ে ছিল।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে এই এলাকায় তারা একাধিক গুলির শব্দ শুনতে পান। পরে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ইবি থানার পিয়ারপুর ও শৈলকুপায় রামচন্দ্রপুর গ্রামের মাঠের মধ্যে শ্মশানঘাট এলাকায় তিনজনকে গুলি করে হত্যার পর ফেলে রাখা হয়েছে। তারা এগিয়ে গিয়ে দেখতে পান তিনজনের মৃতদেহ পড়ে আছে। পাশে তাদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল পড়ে আছে। যার নম্বর চুয়াডাঙ্গা ল ১২-০১২৩।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত হানিফ মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি ছিলেন। হরিণাকুন্ডু উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমান হত্যা মামলায় তার ফাঁসি আদেশ হয়। উচ্চ আদালতেও ফাঁসির রায় বহাল থাকলে হাসিনা সরকারের সময় প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের বিশেষ ক্ষমা নিয়ে এলাকায় ফিরে আসেন হানিফ এবং মৎস্যজীবী লীগের উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি নিযুক্ত হন। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন। আওয়ামী সরকারের পতনের পর হানিফ আরও একটি রাজনৈতিক দলের ব্যানারে ফিরে আসার চেষ্টা করেন। এ হত্যান্ডের ঘটনায় কেউ মামলা করেনি।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদ বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তাদের কীভাবে মারা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
এদিকে হত্যার দায় স্বীকার করে ‘জাসদ গণবাহিনীর কালু’ পরিচয় দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন –সরকারি বরাদ্দে প্রতিবন্ধি আজাদের দোকান ঘরই হয়নি, আবার ব্যবসা
হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় দাবি করা হয় ‘এতদ্বারা ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনাবাসীর উদ্দেশ্যে জানানো যাইতেছে যে, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি নামধারী কুখ্যাত ডাকাত বাহিনীর শীর্ষ নেতা অসংখ্য খুন, গুম, দখলদারি, ডাকাতি, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হরিনাকুন্ডু নিবাসী মো. হানিফ তার দুই সহযোগীসহ জাসদ গণবাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হয়েছেন। তাদের লাশ রামচন্দ্রপুর ও পিয়ারপুর ক্যানালের পাশে রাখা আছে। অত্র অঞ্চলের হানিফের সহযোগীদের শুধরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হলো অন্যথায় আপনাদের একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে। কালু জাসদ গণবাহিনী।’