দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ উদ্বোধন পর সমাবেশে দৃঢ় প্রত্য ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না। তিনি বলেন, ‘বিএনপি সরকারের পতন ঘটাবে বলে নানারকম আন্দোলনের হুমকি দেয়। আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের হুমকি ও ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম আনোয়ারার কেইপিজেড মাঠে দেশের প্রথম কর্ণফূলী নদীর তলদেশ দিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ উদ্বোধন পর সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সমাবেশের আয়োজন করে চট্টগ্রাম উত্তর ও দণি জেলা আওয়ামী লীগ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছে। বরং খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রæয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে ভোট চুরি করেছিল বলেই বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন করে তাদের মতা থেকে হটিয়েছিল। এটা তাদের মনে রাখা উচিত।
আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ওরা ভোট চোর, জনগণের অর্থ চোর, বিএনপি-জামায়াত মানেই হচ্ছে খুনি, সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী।
পঁচাত্তরের অধ্যায় স্মরণ করে তিনি বলেন, বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি। কিন্তু তাদের হত্যার বিচার চাওয়ার কোনো অধিকর আমার ছিল না। কারণ, জিয়া ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে বিচারের পথকে রুদ্ধ করে রেখেছিল। খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ওই খুনিদের মতায় বসিয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, এদেশের কোনো মানুষ না খেয়ে কষ্ট পাবেনা, ভূমিহীন থাকবে না, রোগে কষ্ট পাবে না। সেজন্য ইউনিয়ন কমিউনিটি কিনিক প্রতিষ্ঠা করেছি। ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার সব রকমের ব্যবস্থা করেছি। কাজেই আমার একটাই কাজ দেশের মানুষের কল্যাণ করা। আর কোনো চাওয়া পাওয়া নেই। শুধু আপনাদের দোয়া চাই।
আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচনে দলের পে ভোট চেয়ে বলেন, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছেন, কর্নফূলী টানেলসহ সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। কাজেই আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে আপনারা আমাদের আবারও সেবা করার সুযোগ দেবেন কি-না, হাত তুলে ওয়াদা করুন। এসময় জনগণ সমম্বরে চিৎকার করে দুই হাত তুলে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রæতি দেন।
সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে কর্ণফুলীর উত্তর তীরে পতেঙ্গায় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’-এর ফলক উন্মোচন করেন এবং নগরীর পতেঙ্গাকে আনোয়ারা উপজেলার সঙ্গে সংযোগকারী এই টানেলের ভেতর দিয়ে প্রথম যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি টানেল অতিক্রম করেন এবং নদীর দণি তীরে আনোয়ারায় তার মোটরযানের টোল পরিশোধ করেন। পরে কেইপিজেড মাঠে সমাবেশে যোগ দেন।
১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সংযোগ সড়কসহ ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল সোমবার সকাল ৬টা থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এসময় প্রধানমন্ত্রী ১১টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
শেখ হাসিনা প্রথম পানির নিচের সড়ক টানেলের উদ্বোধন উপলে ডাক বিভাগ প্রকাশিত একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম এবং বিশেষ সীলমোহরও অবমুক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত একটি ৫০ টাকা মূল্যমানের স্মারক নোটও অবমুক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভূমিমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন প্রমুখ।
চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ দণি সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।