দ্রোহ অনরাইন ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে মানসিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জল হোসেন কে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির আট শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘অত্যন্ত দুঃখিত ও মর্মাহত’ উল্লেখ করে বার্তায় বলা হয়, এই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রæততার সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে সচেষ্ট হয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই কমিটি বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় রিপোর্ট পেশ করে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযুক্ত আট শিক্ষার্থীর কথা বলা রয়েছে, যাদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দ্রæত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে। একইসঙ্গে এই ধরনের ‘ন্যক্কারজনক ঘটনার’ পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে ও সকলের সহযোগিতা কামনা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
গত বুধবার সন্ধ্যার পর ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করায় তোফাজ্জলকে ধরে নিয়ে অতিথি কক্ষে আটকে কয়েক দফা পেটানো হয়। একপর্যায়ে ক্যান্টিনে তাকে ভাত খাইয়ে নিয়ে আরেক দফা পেটানো হয়। পরে তাকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তোফাজ্জলকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির একটি সূত্র জানায়, তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যায় অভিযুক্ত ৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন ছাত্রলীগের পদধারী নেতা ছিলেন এর মধ্যে জালাল মিয়া ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও হল ছাত্রলীগের সাবেক (সদ্য পদত্যাগকারী) উপ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক। কোটা সংস্কার আন্দোলনের চলাকালে তিনি ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগে করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিগুলোতে সক্রিয় ছিলেন।
আরও পড়ুন – পার্বত্য চট্টগ্রাম যেভাবে অশান্ত হয়ে উঠলো
আহসান উল্লাহ ছিলেন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং হল ছাত্রলীগের গণযোগাযোগ ও উন্নয়নবিষয়ক উপ-সম্পাদক। আল হোসাইন সাজ্জাদ ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ও আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদ ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। অন্যদিকে সুমন মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের ছাত্র। মুত্তাকীন সাকিন শাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের এবং ওয়াজিবুল আলম সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। ফিরোজ কবির ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এবং আবদুস সামাদ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এই আটজনের মধ্যে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ফিরোজ কবির এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আবদুস সামাদ এখনও গ্রেপ্তার হননি। বাকি ছয় শিক্ষার্থীকে শুক্রবার আদালতে হাজির করলে তারা ‘দায় স্বীকার’ করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।