স্টাফ রিপোর্টার
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া ৪ সংসদীয় আসনে পৃথক রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন নিয়ে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন মামাতো ফুপাত দুই ভাই। প্রথম দিন থেকে তাদের একজন লাঙ্গল মার্কার মাইক প্রচার শুরুর পর প্রচারণা বন্ধ করে দিয়েছেন। অন্য জন মাঠে আসেননি।
খোকসা ও কুমারখারী উপজেলা নিয়ে ৭৮ কুষ্টিয়া -৪ সংসদীয় আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগ, একজন স্বতন্ত্র ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ৮ জন বৈধ প্রার্থী হয়েছেন। এদের মধ্যে খোকসা উপজেলা থেকে তিনজন প্রার্থী হয়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীক ও একই দলের সাবেক এক এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে পোষ্টার ও মাইক প্রচার করছেন। অধিকাংশ প্রার্থীর প্রচারণা নেই বল্লেই চলে।
জাতীয় পাটির লাঙ্গল মার্কা প্রতীকের মনোনয়ন পেয়েছেন খোকসা উপজেলা জাতীয় পাটির সাধারণ সম্পাদক আইন উদ্দিন। তিনি পাটির দুঃসময়ে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়ে গেছেন। প্রথম দিন থেকে মাইক প্রচার শুরু করেন। এখনো এই প্রার্থীর পোষ্টার ছাপেননি। বুধবার সকালে মাইক প্রচার বন্ধ করে দিয়েছেন।
এই নির্বাচনি এলাকায় বাংলাদেশ কংগ্রেস এর ডাব মার্কা প্রতীকের মনোনয়ন পেয়েছেন রাশেদুল ইসলাম। তিনি এখোনো প্রচার প্রচারণা শুরুই করেন নি। আগামী সপ্তাহে প্রচার প্রচারণা শুরু করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। উপজেলা সদরে দলটির কোন অফিস খুজে পাওয়া যায়নি। এই প্রার্থী পরিচয় দেন তিনি বাংলাদেশ কংগ্রেসের কেন্দ্র কমিটির সদস্য হিসেবে। তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার চাঁদট গ্রামে বলে জানা গেছে। তবে তিনি মনোনয়ন ফর্মে নারায়নগঞ্জে স্থায়ী ঠিকানা দেখিয়েছেন।
ন্যাশনাল পিপল্স পার্টির উপজেলা সভাপতি আম মার্কার মনোনয়ন পেয়েছেন শহিদুল ইসলাম। তিনি ইউনয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপ নির্বাচনের ভোটের অভিজ্ঞাতা নিতে সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছেন। আগের নির্বাচন গুলোতে জামানত হারিয়েছেন। তাই প্রচার প্রচারণা শুরু করতে বিলম্ব করছেন।
জাতীয় পাটির প্রার্থী আইন উদ্দিন বুধবার থেকে প্রচার বন্ধ করে দিয়েছেন। এ খবরের সত্যতা জানতে সাথে যোগাযোগের জন্য দিনে অনেকবার চেষ্টা করা হয়। অবশেষে বুধবার সন্ধায় তার ওষুধের দোকানে গিয়ে তার সাথে কথা বলা হয়। তিনি বলেন, কৌশলগত কারণেই প্রচারনা বন্ধ রেখেছেন। তবে শেষর দিকে গিয়ে আবার প্রচারণা চালাবেন।
তিনি আরও জানান, মাঠের রাজনীতিতে যাই হোক তিনি ব্যালোটে থাকছেন। তার মামাত ভাই অন্যদলের প্রার্থী হয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে তার মত রাজনীতি করে, এটা তার অধিকার। তবে তিনি নৌকা বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক মার্কার সাথে যাচ্ছেন না বলেও নিশ্চিত করেন।
বাংলাদেশ কংগ্রেস এর ডাব মার্কা প্রতীকের প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম বলেন, আগামী সপ্তাহে প্রথম থেকে তিনি প্রচারনা শুরু করবেন। জাতীয় পাটির প্রার্থী তার ফুপাত ভাই। তারা দুই ভাই দেশের দুটি নিবন্ধিত দল থেকে মনোনয়ন পাওয়া টা বড় বিষয় বলেও মন্তব্য করেন। তবে দু’জনের রাজনৈতিক নীতি আদর্শের ভিন্নতা রয়েছে বলেও মত প্রকাশ করেন।
ন্যাশনাল পিপল্স পার্টির আম মার্কা প্রতিকের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বলেন, আগের নির্বাচন গুলোতে তার টিকে থাকাটাই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। পাটি পোষ্টার পাঠাতে বিলম্ব হওয়ায় তিনি স্থানীয় ভাবে কিছু পোষ্টার ছাপিয়েছেন। বুধবার থেকে প্রচারণা শুরু করেছেন বলে দাবি করেন। পার্টি অফিস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের পার্টি নতুন। এখনো অফিস নেওয়া হয়নি। তবে অচিরেই উপজেলা সদরে অফিস নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রউফ এর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ আলতাব মাহামুদ বলেন, তারা এলাকার উন্নয়নে গতি ফেরানোর জন্য প্রার্থী দিয়েছেন। প্রচার প্রচারণায় তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ, তার প্রধান এজেন্ট কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুজ্জামান অরুনকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে তাদের প্রতিনিধি ও খোকসা উপজেলা আওযামী লীগের সভপতি বাবুল আখতার বলেন, ভোট যুদ্ধের প্রচার প্রচারণায় তাদের বেগ পেতে হচ্ছে না। শেখ হাসিনার ধারাবাহিক উন্ননের জোয়ারে তারা অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। তবে বিরুধীরা অচিরেই আস্তা কুড়েতে যাবেন।