দৌলতপুরের বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে কলেজের গাছ বিক্রির অভিযোগ

0
70

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কলেজের ৪টি মেহগনি গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গাছ কাটার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।

উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলাম নান্নু এবং আরেক সদস্য আলাউদ্দিন বাদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার ছুটির দিনে কলেজের কাউকে না জানিয়ে ওই গাছ কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন ওই নেতারা। এ নিয়ে এলাকার ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। এদিকে রবিবার গাছ কাটার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ ও দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমন্বয়ে ৩৫ টি ছোট ছোট গাছ নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করা হয়। গত কয়েকদিন ধরে নিলামে বিক্রয় করা ওসব গাছ কাটা হয়। এই সুযোগে উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক ও বিএনপির সদস্য আরিফুল ইসলাম নানু মাস্টার এবং উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির আরেক সদস্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ৪টি গাছ বিক্রি করেন কাঠ ব্যবসায়ী হাবিব ও মোশারফ হোসেন মোশার কাছে। শুক্রবার সকালে বিএনপির ওই দুই নেতার উপস্থিতিতে গাছ চারটি কাটা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

সূত্র আরও জানায়, নিলামের বাইরে ওই চারটি মেহগনি গাছের মূল্য প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা। কেউ বুঝতে পারবে না ভেবে নিলামের গাছের সাথে গাছ ৪টি বিক্রয় করেন ওই নেতারা।

নিলামের মাধ্যমে গাছ ক্রয় করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী আলামিন। নিলামের বাইরে ৪টি গাছ কাটার সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি জানান, ছোট ছোট ৩৫ টি গাছ নিলামের মাধ্যমে ৩৫ হাজার টাকায় ক্রয় করি। ভ্যাট দিয়ে সর্বমোট ৪২ হাজার টাকা হয়। ৮ হাজার টাকা লাভে গাছগুলো (৩৫টি) ৫০ হাজার টাকায় কাঠ ব্যবসায়ী হাবিব ও মোশারফের কাছে বিক্রি করি। পরে যে চারটি বড় গাছ কাটা হয়েছে সেগুলো নিলামের চিহ্ন করা ৩৫টি গাছের মধ্যে ছিল না। এই গাছগুলো কেন কাটা হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে শুনেছি গাছ একটি ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে আরিফুল ইসলাম নান্নু ও আলাউদ্দিন বাদলের নিকট থেকে ক্রয় করা হয়েছে।

দৌলতপুর কলেজের পিয়ন আব্দুল জলিল জানান, নিলামে বিক্রয়কৃত গাছের সাথে অতিরিক্ত চারটি গাছ শুক্রবার কাঠ ব্যবসাী হাবিব ও মোশারফের লোকজন কেটে নিয়ে যায়। আরিফুল ইসলাম নান্নু ও আলাউদ্দিন বাদলের নির্দেশে গাছ কাটা হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা তাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুস সালাম স্যারকে অবগত করেছি।
অতিরিক্ত গাছ কর্তনের বিষয়ে কাঠ ব্যবসায়ী হাবিব ও মোশারফ বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই ৪টি গাছ কাটা হয়েছে।

দৌলতপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম জানান, অতিরিক্ত গাছ কর্তনের বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। ব্যক্তিগত কাজে আমি রাজশাহী রয়েছি। কলেজে যাওয়ার পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব।

আরও পড়ুন – চোরাই মোটরসাইকেলসহ ১০ মামলার আসামি গ্রেপ্তার

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, নিলামের মধ্যে বড় কোন গাছ কাটার সিদ্ধান্ত ছিল না। বিষয়টি শোনার পরপরই বনবিভাগের কর্মকর্তাকে পরিদর্শন করে এ বিষয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। নিলামের বাইরে কোন গাছ কাটা হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।