নিখোঁজ প্রতিবন্ধি স্বামী পরিতক্তার মৃতদেহ উদ্ধার

0
166

স্টাফ রিপোর্টার

বাড়ির পাশে রাস্তায় ঘর গৃহস্থালীর কাজ করা সময় স্বামী পরিতক্তা বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধি নারী ইয়াসমিন নিপা (২৫) নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের প্রায় ১৫ ঘন্টা পর বাড়ির পাশের সুপারি বাগান থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিবারের দাবি সাবেক স্বামী এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকতে পারে।

বুধবার ভোরে খোকসার শিমুলিয়া ইউনিয়নরে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাইকপাড়া মির্জাপুর গ্রামের নিজেদের ভাগের সুপারি গাছের বাগান থেকে নিখোঁজ গৃহবধূ ইয়াসমিন নিপার মৃতদেহ দেখতে পায় স্থানীয় শিশুরা। তার নিহতের বাবার পরিবারকে খবর দেয়। পরে থানা পুলিশ গিয়ে ঘটনা স্থল থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। মৃতদেহের ডান হাতের মধ্যে একটি সুপারি পাওয়া যায়। তবে গায়ে কোন আঘাতের চিহ্ণ পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার বিকালে বাড়ির পাশের রাস্তায় গরুর গবরের লাঠি বানানোর সময় নিপা নিখোঁজ হয়। অনেক খোজা-খুজির পর সেই রাতেই স্বামী পরিতক্তা নারীর মা রাবেয়া খাতুন খোকসা থানায় গিয়ে পুলিশকে নিখোঁজের বিষয়ে জানান। রাতে গ্রামে পুলিশ আসে কিন্তু নিপাকে আর খুজে পাওয়া যাযনি।

নিহত গৃহবধূর বাবা সবেদ আলী একজন সাবেক সেনা সদস্য। তিনি পাইকপাড়া মিজাপুর গ্রামের বাসিন্দার। প্রায় ৮ বছর আগে বাড়ির পাশের বিলজানি গ্রামের কুদ্দুস মন্ডলের ছেলে রফিকুল ইসলাম রফিকের সাথে বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধি নিপাকে পারিবারিক ভাবে বিয়ে দেওয়া হয়। দেওয়া হয় মোটা অংকের যৌতুক। এক বছর যেতে না যেতেই গৃহবধূর সাথে স্বামী শ্বশুরের কলহের সূত্রপাত হয়। তিন বছরের মাথায় নিপাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে গা ঢাকাদেন স্বামী রফিক। এ নিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা করা হয়। ইতোমধ্যে ওই মামলায় স্বামী রফিকের দুই বছরের জেল ও ৩ লাখ ১০০৭৫ টাকা জরিমানা করে আদালত। পালাতক স্বামীর পরিবারের সাথে নিপার পরিবারের বিরোধ বাড়তে থাকে।

নিহতের মা রাবেয়া খাতুন জানান, আগের দিন বিকালে তার মেয়ে রাস্তায় গরুর গবরের লাঠি তৈরী করছিল। এসময় সে নিখোঁজ হয়। তারা সম্ভব্য সব জায়গায় খোজা-খুজি করে। মেয়ের সন্ধান না পেয়ে রাতেই থানা পুলিশকে জানান। তার মেয়েকে সাবেক স্বামী রফিক হত্যা করে বাড়ির পাশে ফেলে গেছে বলে ধারণা করছেন।

তিনি আরো জানান, রফিকের পরিবার সব দেখে শুনে মোটা অংকের যৌতুক নিয়ে প্রতিবন্ধি নিপাকে বিয়ে করেন। কিন্তু পান থেকে চুন খরসলেই তার উপর নির্যাত করত জামাই। এক পর্যাযে তারা মেয়েকে তালাক দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। মামলা চলাকালে ও রায় ঘোষনার পরেও রফিক তার বাবার বাড়ি আসা যাওয়া করত। মামলায় হারার ক্ষোভে তারাই নিপাকে কৌশলে নিয়ে যায়। শ্বাসরোধ করে হত্যা পর এখানে ফেলে গেছে। তিনি মেয়ের হত্যা কারীদের বিচার দাবি করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আইন উদ্দিন মন্ডল বলেন, হত্যার কারণ বোঝা যাচ্ছে না। তবে মেয়ের মায়ের দাবি সত্য হতে পারে। স্বামী পরিতক্তা নিপা ভালো মেয়ে ছিল। সে বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধি হলেও গ্রামের মানুষের সাথে ভালো আচরণ করত। তিনিও এই হত্যান্ডের সাথে জড়িতদের চিহ্ণিত করে বিচারের দাবি করেন।

আত্মগোপনে থাকা রফিকের মা আনোয়ারা বলেন, মামলার পর থেকে রফিক আত্মগোপন করে। আর ফিরে আসেনি। এখন তারকেই দোষারপ করা হচ্ছে।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফা হাবিবুল্লাহ জানান, তিনি নিজে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। মৃতদেহের শরীরে কাপড় স্বাভিক ছিল। হত্যার তেমন কোন আলামত পাওয়া যায়নি। নিহতের ডান হাতের মধ্যে একটি সুপারি পাওয়া গেছে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তীতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।