কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চৌরঙ্গী মহাবিদ্যালয়ে আধাপাকা ভবন নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় নির্মাণাধীন দেওয়াল ভেঙে দিয়েছে স্থানীয়রা।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকাল এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, ভবন নির্মাণে নিম্নমানের ইট-খোঁয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। সিমেন্ট বালুও পরিমাণ মতো দেওয়া হচ্ছেনা। এসব অনিয়মের কারণে দুই সপ্তাহ আগে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা। বুধবার আবার একইভাবে কাজ চলছিল। সেজন্য স্থানীয় কিছু ছেলে নির্মানাধীন দেওয়াল ভেঙে দিয়ে চলে গেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কলেজের খেলার মাঠে দক্ষিণ পাশে তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। বুধবারে নির্মাণ করা দেওয়ালটি ভাঙা। বালু, সিমেন্ট লাগানো ইটগুলো পড়ে আছে। কয়েকজন শ্রমিক যন্ত্রপাতি ধোঁয়া – মুছার কাজ করছেন।
এসময় কাজের মিস্ত্রি রাশিদুল বলেন, সকাল থেকে তারা ভবনের দেওয়াল নির্মাণের কাজ করছিলেন। হঠাৎ বিকেল পৌনে তিনটার দিকে তিনটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন যুবক এসে তাদের দেওয়াল ভেঙে দিয়ে চলে যায়। তিনি কাউকে চিনতে পারেননি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক শ্রমিক বলেন, এক, দুই, তিন নম্বরসহ সব ধরনের মালামালই আছে। এসবের বিষয় ঠিকাদারই ভাল বলতে পারবেন। তিনি ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্যে বলেন।
জানতে চাইলে চৌরঙ্গী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ লাল মুহাম্মদ মুঠোফোনে বলেন, ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন কক্ষ বিশিষ্ট আধাপাকা টিনশেডের একটি ঘর নির্মাণ কাজ চলছে। তবে ইটের মান খারাপ হওয়ায় দু’সপ্তাহ আগে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ ( বুধবার) কাজ চলছে কি না? তা জানা নেই। দেওয়াল ভেঙে দেওয়ার বিষয়টিও তিনি জানেন না।
তাঁর ভাষ্য, বারবার ঠিকাদারকে বলেও কাজের মান ভালো হচ্ছেনা। তিনি এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কামনা করেছেন।
জানা গেছে, ২০২৩ -২৪ অর্থ বছর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ‘মেরামত ‘ বরাদ্দের আওতায় চৌরঙ্গী মহাবিদ্যালয়ে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কাজের ঠিকাদার কুষ্টিয়ার সিনথিয়া এন্টারপ্রাইজ। তবে কলেজে ভবন না থাকায় অধ্যক্ষের বিশেষ অনুরোধে ঠিকাদার মেরামতের বদলে নতুন আধাপাকা ঘর নির্মাণের কাজ করছেন।
কাজের ঠিকাদার আহম্মেদ আলী বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নমানের ইট বাতিল করে আজ ভাল ইট দিয়ে কাজ চলছিল। তবুও কে বা কাহারা নির্মাণাধীন দেওয়াল ভেঙে দিয়েছে। বিষয়টি দুঃখজনক। প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন তিনি। তাঁর ভাষ্য, বরাদ্দ মেরামতের হলেও অধ্যক্ষের অনুরোধে তিনি আধাপাকা ভবন নির্মাণ করছেন।
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী জাফর আলী ফোনে বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় একবার কাজ বন্ধ করা হয়েছিল। ফের নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার হলে আবারো কাজ বন্ধ করা হবে।
আরও পড়ুন – ঝিনাইদহে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ
সরকারী কাজে কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।