দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চাওয়ার কাছে নির্বাচন কমিশন আত্মসমর্পণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। একতরফা জাতীয় নির্বাচনের ঘোষিত তফসিলের সময়ে ভোট গ্র্রহণ হবে, নাকি নিশিরাতে হবে নির্বাচন কমিশনের বলা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
শুক্রবার বিকালে এক ভার্চ্যুয়াল ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন রহুল কবির রিজভী। এ সময় বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন তিনি। বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, পুলিশের চলমান গ্রেপ্তার অভিযানে বিএনপি নেতা কর্মীদের না পেলে তাঁদের বাবা, ভাই ও ছেলেসহ আত্মীয়স্বজনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
উদাহরণ হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক দল নেতা শিমুল বিশ্বাসকে না পেয়ে তাঁর ছোট ভাই সহিদুর রহমান বিশ্বাসকে গ্রেপ্তারের কথা উল্লেখ করেন রিজভী। তিনি বলেন, সহিদুর রহমান কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকলেও তাঁকে ধরে নেওয়া হয়েছে।
সরকারবিরোধী চলমান আন্দোলনে তরুণেরা সামনের সারিতে থাকায় তাঁদের ওপর ব্যাপক হারে সহিংসতা চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সশস্ত্র নেতাকর্মী ও পুলিশ বিরোধী রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের বাসার গেট ভেঙে, তালা ভেঙে ও জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকছে। তল্লাশির নামে পুলিশ গ্রামের পর গ্রাম বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ির সব ঘর তছনছ করে দিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী অভিযোগ করেন, পাবনা জেলার বেড়া পৌরসভা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলামকে না পেয়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাঁর বৃদ্ধ বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসানের বাবা মৃত্যুবরণ করলেও তাঁর লাশ দেখার জন্য কামরুল জামিন পাননি। এ ধরনের অমানবিক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান বিএনপির এই নেতা।
দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনকে চিরবিদায় দিতে নানা সর্বনাশা আয়োজন চলছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি তোলা মাত্রই গণতন্ত্রকামী মানুষদের রক্ত ঝরানো হচ্ছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগোষ্ঠীই এখন বুলেটের নিশানা। বারবার গণতন্ত্রকে হত্যা করাই আওয়ামী লীগের নিজস্ব শৈলী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘এক ব্যক্তি, এক দলের দুঃশাসনে বাংলাদেশের মানুষ এক বন্দিশিবিরে আটকে আছে, মৌলিক মানবিক অধিকার বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে। সার্বভৌমত্বকে বিক্রি করে দিয়ে মতায় টিকে থাকার গ্যারান্টিপত্র আদায় করা হয়েছে। আর সে জন্য জনগণের পছন্দে সরকার গঠন ও পরিবর্তনে গণতান্ত্রিক রীতিকে গুম করা হয়েছে। জনগণকে দমন করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ এখন সর্বগ্রাসী রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে।