পদ্মা তীরে বিক্রয়কেন্দ্র না থাকায় মাছের ন্যায্য দাম পায় না মৎস্যজীবীরা

0
45

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

খর¯্রােতা পদ্মা নদীর অববাহিকার কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর, মরিচার ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন। এসব গ্রামের প্রায় ৯০০ মৎস্যজীবী পরিবারের জীবিকার একমাত্র উৎস্য নদীর প্রকৃতিক মাছ শিকার। এ ছাড়া বাড়তি আয়ের আশায় নদীপাড়ের সাধারন মানুষ মাছ শিকারকে পেশা হিসেবে গ্রহন করেছেন। প্রতিদিন এসব মাছ বিক্রির জন্য পদ্মা তীরবর্তী অঘোষিত ঘাটসহ এলাকার আশপাশের ছোট বড় হাট বাজারগুলোতে। আর নদীর এসব টাটকা মাছের বেচাকেনা চলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। পদ্মা তীরের ঘাটগুলোতে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়। এই হিসাবে বছরে শতকোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়। তবে পদ্মা অববাহিকায় সরকারি ভাবে মাছ বিক্রয়কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি।

এসব হাটে সবচেয়ে বেশি দেখা মেলে চিংড়ি, পিউলি, চ্যালা, ঘাউরা, বাঁশপাতা, বাইম, বেলে, ট্যাংরাসহ নানা পদের মাছ। এগুলো আকারভেদে ১৫০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হচ্ছে।

জানা গেছে, পদ্মা তীরবর্তী হওয়া সত্বেও বৃহত্তর এই উপজেলায় এখন পর্যন্ত কোনো মৎস্য বিক্রয়কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। যার কারণে জেলেরা তাদের মাছের সঠিক দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একইভাবে দ্রæত মাছ বিক্রিতেও পড়ছেন বিড়ম্বনায়। তাই এলাকার জেলেরা দাবি তুলেছেন, দ্রæত এখানে সরকারি উদ্যোগে একটি মৎস্য বিক্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার। আর এটা সম্ভব হলে শুধু মৎস্যজীবী পরিবারের সমৃদ্ধিই বয়ে আনবে না, স্থানীয় মৎস্য খাতকে সমৃদ্ধ করবে।

মৎস্যজীবী সিদ্দিক ও জামাল জানান, প্রতিদিন পদ্মা নদী থেকে তাঁরা যে পরিমাণ মাছ শিকার করেন, তা বিক্রির জন্য তীরবর্তী ঘাট ও স্থানীয় বাজারের হাটগুলোতেই নিয়ে আসেন। কিছু পরিমাণ পাঠানো হয় কুষ্টিয়া শহরের আড়তেও। এতে প্রতিদিন যা আয় হয়, তা দিয়েই চলে তাদের সংসার।

নাজমুল ও মিন্টু বলেন, আকার ও মাছের ধরনের ওপর নির্ভর করে মাছের দাম নির্ধারণ হয়। আবার ক্রেতার থেকে আমদানি বেশি হলে দাম কমে এসব মাছের।

কথা হয় নদীর পাড়ে মাছ কিনতে আশা তুষার রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকালে ঘাটে এসেছি নদীর টাটকা মাছ কিনতে। যদিও এখানে দাম বেশি। তবে একদম ফ্রেশ এসব মাছের স্বাদ বেশি।

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমেদ বলেন, প্রতি মৌসুমের মে মাসের শেষ সময় থেকে ডিসেম্বরের পর্যন্ত নদীতে মাছ বেশি পাওয়া যায়। প্রতিদিন কী পরিমাণ মাছ শিকার বা বিক্রি হয়, এর সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও গড়ে অন্তত দেড় হাজার কেজি মাছ বিক্রি হয়। যার থেকে বছরে কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকার বেশি আয় হওয়ার কথা।

আরও পড়ুন – কুমারখালীতে রেস্তোরা ও চাউলের দোকানে জরিমানা

মৎস্য কর্মকর্তা আরও জানান, আমরা একাধিকবার প্রস্তাব পাঠিয়েছি, তবে বাস্তবায়ন হয়নি। এখানে একটি মৎস্য বিক্রয়কেন্দ্র তৈরি করা সম্ভব হলে এই খাতের আরও উন্নয়ন সম্ভব।