পদ্মা-মেঘনায় ২২ দিন ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ

0
121

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

ইলিশের প্রজননের লক্ষে বুধবার মধ্যরাত থেকে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ হয়েছে। ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে দেশব্যাপী ইলিশ পরিবহণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে এবং একইসঙ্গে মা ইলিশ সংরণ অভিযান বাস্তবায়ন করা হবে।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে লক্ষীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় নিষেধাজ্ঞার সময়ে কোনো জেলে নদীতে নামতে পারবেন না।

তিনি আরও জানান, সরকারের এই আদেশ অমান্য করে ইলিশ মাছ আহরণ ও বিক্রি করলে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাসহ উভয় দন্ড হতে পারে।

এদিকে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় এর মধ্যেই নৌকাসহ মাছ ধরার সরঞ্জামাদি তীরে উঠিয়েছেন জেলেরা। তবে নিষেধাজ্ঞাকালে পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

চাঁদপুর সদর উপজেলার ইব্রামহীমপুর ইউনিয়নের জেলে বিল্লাল খান বলেন, প্রতিবছর সরকার দুইবার ইলিশ ধরতে নিষেধ করে। আমরা সবসময়ই নিষেধাজ্ঞা পালন করি। কিছু জেলে আছে, যারা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাছ ধরে।

তবে যারা ধরে তাদের বেশিরভাগই নিরুপায় হয়ে ধরে। কারণ সরকার যে চাল দেয় তা দিয়ে কিছু হয় না। চালের সাথে আরো জিনিস লাগে, তার খরচ কে দিবে। আমাদের দাবি চালের সাথে যেন আর্থিক সহায়তাও প্রদান করা হয়।

চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার এলাকার জেলে মোহাম্মদ দিদার আলী বলেন, এই বছর নদীতে ইলিশ কম। সারাদিন জাল ফেলেও তেমন ইলিশ উঠে না। ধারদেনা কিস্তি করে আমাদের চলতে হয়। এর মধ্যে ২২ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ। নৌকা-জাল উঠিয়ে ফেলবো। দেখি অন্য কাজ করে সংসার চালাতে হবে।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, অভিযান চলাকালে চাঁদপুর মাছঘাটে ২২ দিন ইলিশ কেনা-বেচা বন্ধ থাকবে। একটা মাছও বিক্রি হবে না। আমরা সরকারের সকল নিয়মকানুন মানি।

সরকার এ সময় জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেয় কিন্তু মাছঘাটের শ্রমিকরা কোনো সহায়তা পায় না। আমি প্রশাসনের কাছে আহবান জানাবো যাতে মাছঘাটের শ্রমিকদেরও সহায়তা করা হয়।

মৎস্য কর্মকর্তা মেহেদী জানান, চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ৪৩ হাজার ৭৭২জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। এ বছর পাঁচ কেজি চাল বাড়িয়ে জেলেদের ২০ কেজির পরিবর্তে ২৫ কেজি চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে বিজিএফের চাল বরাদ্দ হয়েছে এবং অনেক স্থানে বিতরণও শুরু হয়েছে।

এ বছর অভিযান সফল হলে আগামীতে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, আশা করি জেলেরা মাছধরা থেকে বিরত থাকবে- বলেন এই মৎস্য কর্মকর্তা।