স্টাফ রিপোর্টার
বিদেশী দাতাদের সাহায়তার ২৬ হাজার টাকা পাওয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রতিবন্ধিদের কাছ থেকে সঞ্চয়ের কথা বলে ৬ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র।
সোমবার কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা তার অফিশিয়াল ও ব্যক্তিগত ফেসবুকে একটি ভুয়া নিবন্ধন ফর্মের একটি ছবি সম্বলিত ষ্ট্যাটাস দিয়ে শর্তক করেছেন।
উপজেলা সমাজ সেবা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, একটি চক্র উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়ন, গোপগ্রাম ইউনিয়ন, জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়ননের প্রতিবন্ধিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদেশী সহায়তার গল্প শোনাচ্ছেন। তারা বলছে, জেস ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান তালিকা ভুক্ত প্রতিবন্ধিদের জন্য ২৬ হাজার টাকা বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছে। এক পর্যায়ে সবুজ কাগজের একটি ফরর্মে প্রতিবন্ধিদের নাম ঠিকানা লিখেন। এবার সঞ্চয় হিসেবে ৬ হাজার টাকা দাবি করছেন। অনেকে লোভে পরে ধার-দেনা করে কথিত কর্মকর্তাদের হাতে টাকা তুলে দিচ্ছে। এরপর প্রতিবন্ধি ব্যক্তির নাম ঠিকানা লেখা একটি সবুজ কাগজ ধরিয়ে দিয়ে প্রতারকরা লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছেন।
শোমসপুর গ্রামের বাক প্রতিবন্ধি তানজিয়া খাতুন (১৭)। তার মা আরিফা আক্তার প্রতারক চক্রের দেওয়া ফরম নিয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে সোমবারে হাজির হন। অফিসের কর্মকর্তাকে কাগজটি দেখানোর পর প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসে। একটি সঙ্গবদ্ধ প্রতারকচক্র করছে বলে জানা গেছে।
শোমসপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শোমসপুর গ্রামে বাক প্রতিবন্ধি তানজিলার মা আরিফার সাথে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার তখন দুপুর। এ সময় তিনি বাড়ির বৈঠক খানায় দরজির কাজ করছিলেন। দুইজন লোক এসে নিজেদের উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা পরিচয় দেন। প্রতিবন্ধি মেয়ের বাবা প্রবাসে থাকেন, এ কারনে সৌদি আরবের একটি সংস্থা তার প্রতিবািন্ধ মেয়ের নামে ২৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে বলে জানায়। এ টাকা পাওয়ার জন্য ৬ হাজার টাকা সঞ্চয় রাখতে হবে। এক পর্যায়ে প্রতিবন্ধি মেয়ের কথা ভেবে প্রতারকদের দাবি করা টাকা দিয়ে দেন। প্রতারকরা তাকে একখানা সবুজ কাগজের প্রতিবন্ধি মেয়ের নাম ঠিকানা লিখে দিয়ে যায়।
এ ঘটনার পরে নিজের মনে সন্দেহ হলে তিনি উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে যান। প্রতারণার বিষটি নিশ্চিত হন।
প্রতারণার শিকার আরিফা খাতুন আরও জানান, তার কাছে আসা প্রতারকরা দুইজন ছিলেন। যিনি অফিসার হিসেবে পরিচয় নিয়েছেন তার বাম হাত কাটা। তাদের গলায় অনেক গুলো পরিচয় পত্র ঝুলানো ছিলো। তিনি প্রতাকরাদের আটক ও বিচারের দাবি করেন।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, ডিজিটাল প্রতারনা ঠেকানো সম্ভব। কিন্তু এ্যানালক প্রতারণা ঠেকানো কঠিন। তার কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার পর তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সর্তক করেছেন। খোকসার পদ্মা নদীর তীরের গ্রাম গুলো থেকে এ্যানালক প্রতারণার দুই একটি ঘটনা ঘটছে। তবে পাশের উপজেলাতে আরো বেশী প্রতারণার ঘটনা ঘটছে বলে তিনি জানান।