প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বিচারক জীবনের ইতি টানলেন

0
172

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বিচারক জীবনের ইতি টানলেন।

রেওয়াজ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে সুপ্রিম কোর্টের ১ নম্বর বিচারকে তাঁকে বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।

২৫ সেপ্টেম্বর তিনি অবসরে যাবেন। তবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে সর্বোচ্চ আদালতে শরৎকালীন অবকাশ (ছুটি) শুরু হওয়ায় ৩১ আগস্ট তিনি বিচারিক কর্ম থেকে অবসরে যাচ্ছেন।

বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি পদে শপথের মাধ্যমে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি টানা ২০ মাস বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর কর্মকালে মামলাজট নিরসনে সাফল্য রয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তথ্যানুযায়ী, উচ্চ ও অধস্তন আদালতে তাদের দায়ের করা সাড়ে ছয় হাজার মামলা নিষ্পত্তির অপোয় রয়েছে। এর মধ্যে আপিল বিভাগে বিচারাধীন প্রায় আড়াইশ মামলা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে করা কোনো আপিল এ সময়ে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হয়নি।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দায়িত্বগ্র্রহণের পরপরই বিচার বিভাগে গতিশীলতা আনতে জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সমন্বয়ে বেঞ্চ পুনর্গঠন, সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, পুরোনো মামলা নিষ্পত্তিতে বিভিন্ন সময়ে বিশেষ বেঞ্চ গঠনসহ বিচারকদের পূর্ণ কর্মঘণ্টা কাজে ব্যয় করার নির্দেশনা দিয়ে বেশ কিছু আদেশ জারি করেন। অধস্তন আদালতে বিভাগওয়ারি মামলাজট তদারকি ও পর্যালোচনাসহ মামলা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে হাইকোর্টের আট বিচারপতির নেতৃত্বে পৃথক কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। বছরব্যাপী এসব কমিটি নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করে। প্রধান বিচারপতি দেশের অধস্তন আদালতগুলো পরিদর্শন করার পাশাপাশি সেখানকার সমস্যা সমাধানে পদপে গ্রহণ করেন; বিচারক ও আইনজীবীদের মামলাজট কমাতে তাগিদ দেন। এসব তৎপরতা সার্বিকভাবে মামলাজট কমাতে সহায়ক হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের সব আদালতে বিচারাধীন ছিল ৪২ লাখ ৮ হাজার ৯৮৭টি মামলা। ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিচারাধীন মামলা ছিল ৪২ লাখ ৩ হাজার ৫১৬টি। এ সময়ে নতুন মামলা দায়েরের তুলনায় নিষ্পত্তি বেড়েছে।

এ ছাড়া প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কর্মকালে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত হয় বঙ্গবন্ধুর স্মারকসংবলিত স্তম্ভ¢ ‘স্মৃতি চিরঞ্জীব’। এখানে আরও রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৬৯ আইনজীবীর নামের তালিকা। সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের অধস্তন আদালতগুলোতে বিচারপ্রার্থীদের সুবিধার্থে নির্মাণ করা হয়েছে ‘ন্যায়কুঞ্জ’ নামে বিশ্রামাগার।