স্টাফ রিপোর্টার
ক্লিনিকে সিজার অপারেশন করা বি ভাইরাস পজেটিভ প্রসূতির শরীরে হ্যাপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন দেওয়া অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রসূতির পরিবার। ভ্যাকসিনের ভুল প্রয়োগ হয়েছে বললেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা সদরের খোকসা আধুনিক প্রাইভেট হাসপাতালে গতকাল মঙ্গলবার (১৩ মার্চ) প্রসূতি মেহেরুন (২০) এ শরীরে হ্যাপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। প্রসূতি মেহেরুনের বাড়ি রাজবাড়ি পাংশ উপজেলার সরিষা প্রেমটিয়া গ্রামে। তার স্বামীর নাম শিমুল হোসেন। গৃহবধূ দুই সন্তানের মা।
পরিবার সূত্রে জানা গেছ, মঙ্গলবার সকালে নিজের বাড়িতে গৃহবধূর প্রসব বেদনা শুরু হয়। এক পর্যাযে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে মেহেরুনকে উপজেলা সদরের খোকসা আধুনিক প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে গৃহবধূ পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়।
এক সময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে প্রসূতির শরীরে বি ভাইরাস পজেটিভ আছে জানানো হয়। এ কথা শোনার পর কিনিকের নার্সরা প্রসূতিকে হ্যাপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন দেয়ার পরামর্শদেন। এক পর্যায়ে বাজার থেকে ভ্যাকসিনের আনিয়ে তরিঘরি করে প্রসূতির শরীরে তা পুশ (প্রয়োগ) করে। এরপর পরিবারের লোকদের মধ্যে প্রসূতির ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়ে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়। আতঙ্কিত হয়ে টিকার পাশ্ব প্রতিক্রিয়া জানতে প্রসূতির স্বামী ও পরিবারের লোকেরা বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে ছুটা ছুটি শুরু করেছে।
প্রসূতির স্বামী শিমুল জানান, পাঁচ বছর আগে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে প্রথম সন্তান প্রসবের পর রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নবজাতকে হ্যাপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল। এবারও তারা নবজাতকের রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে বি ভাইরাসের টিকা দেওয়ার জন্য ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু ক্লিনিকের লোজন ভুল করে নবজাতককে টিকা না দিয়ে বি ভাইরাসের ক্যরিয়ার প্রসূতি মায়ের শরীরে টিকা পুশ (প্রয়োগ) করেছে। এতে করে তার স্ত্রীর (প্রসূতি) সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন। সে কারণেই তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বড় ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন।
কিনিকটির মালিক হারুন অব রশিদ জানান, অপারেশনে অংশ নেওয়া ডাঃ ফয়সাল আরেফিন ও রাকিবুল ইসলাম নয়ন টিকার অর্ডার করেছে। তা ছাড়া প্রসূতির স্বামীর চাপে তারা প্রসূতি মেহেরুনকে টিকা দিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী রাকিবুল ইসলাম নয়ন জানান, তিনি মেহেরুনের সিজার অপারেশন করেছে। তবে তার সাথে ফয়সাল আরেফিন নামের একজন ডাক্তার ছিলেন। তবে তারা রোগীর জন্য বা নবজাতকের জন্য টিকার অর্ডার করেনি। এ ছাড়া প্রসূতির বা নবজাতকের রক্ত পরীক্ষার পর বিষেশজ্ঞ চিকিৎকের পরামর্শে টিকা দেওয়া যায়। কিন্তু পরীক্ষা নিরিক্ষা ছাড়া টিকা দেওয় উচিত নয়।
সন্তান সম্ভাবা মেহেরুনের সিজার অপারেশনে অংশ নেওয়া জানান ডাঃ ফয়সাল আরেফিন বলেন, প্রসূতি বি ভাইরাসের ক্যারিয়ার। তাকে টিকা দেওয়া ভুল হয়নি। তিনি জেনে বুঝেই টিকা দিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামরুজ্জামান বলেন, টিকার ভুল প্রয়োগ হয়েছে। বি ভাইরাসের ক্যারিয়ারকে টিকা দিলে তাতে লাভ হয় না। শিশুর বয়স কয়েক সপ্তাহ হলে তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বি ভাইরাস নেগেটিভ হলে টিকা দিলে কাজ হবে। যদি টিকা দেওয়া হয় তা নিরর্থক হয়েছে।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডাঃ আকুল উদ্দিন বলেন, ওষুধ মানুষের কল্যানে। জেনে বুঝে দিতে হবে। তবে বি ভাইরাস পজেটিভ রোগীর কে হ্যাপাটাইটিস বি ভ্যাকশিন দিলে কি হতে পারে তা তিনি জেনে জানাবেন।